Advertisement
Advertisement

মন্দিরেই কোরান পড়াচ্ছেন হিন্দু ‘দিদিমণি’ পূজা

১৮ বছরের ‘দিদিমণি’ পূজা কুশওয়াহা মন্দিরে বসেই মুসলিম সম্প্রদায়ের ৩৫ জন খুদে পড়ুয়াকে কোরান পড়ায়৷

Pooja Kushwaha, The hindu girl, who teaches Quran to Muslim Children
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 7, 2016 9:08 am
  • Updated:September 7, 2016 10:16 am  

অনিন্দ্য সিংহচৌধুরি: সম্প্রীতির অনন্য নজির উত্তরপ্রদেশে৷

পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের আগ্রা শহরের সঞ্জয় নগর কলোনি৷ সকালে নয়, সন্ধ্যা হতেই দেখা মেলে সেই দৃশ্যের৷ ছোট্ট একটা মন্দির৷ ১৮ বছরের ‘দিদিমণি’ পূজা কুশওয়াহা সেই মন্দিরে বসেই মুসলিম সম্প্রদায়ের ৩৫ জন খুদে পড়ুয়াকে কোরান পড়ান৷ দ্বাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়ার উচচারণ শুনে একেবারে তাজ্জব বনে যান সকলে৷

Advertisement

কেন? স্পষ্ট আরবি উচ্চারণে যখন পূজা পড়ুয়াদের কোরানের পাঠ দেন, তখন কেউ বুঝতেই পারেন না যে, ১৮ বছরের ‘শিক্ষিকা’-র মাতৃভাষা মোটেও ওই ভাষা নয়৷ প্রথমে অনেকেরই পূজার মাতৃভাষা নিয়ে সন্দেহ হয়েছিল৷ কিন্তু ক্রমে ক্রমে সকলেই সত্যিটা জানতে পারেন৷ পূজার পড়ানোর পারদর্শিতায় পড়ুয়ারা একেবারে মুগ্ধ৷ অল্পদিনের মধ্যেই ওই পড়ুয়ারা দিদিমণির ‘ফ্যান’ হয়ে গিয়েছে৷ শুধু তারাই নয়, বাচ্চাদের অভিভাবকরাও বেজায় অভিভূত৷

তা কেমনভাবে আরবি ভাষায় পারদর্শী হল পূজা? কোনও রহস্য রয়েছে কি? কোনও রহস্য নয়৷ পূজা জানিয়েছেন, তাঁদের পাড়াতেই সঙ্গীতা বেগম নামে এক মহিলা থাকতেন৷ তাঁর বাবা ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ৷ আর মা হিন্দু৷ কোরানের প্রতি টান ছিল৷ পূজা ছোট্টবেলায় ওই সঙ্গীতা বেগমের কাছেই কোরান শিখতে যেতেন৷ সেখান থেকেই কোরান রপ্ত করেন তিনি৷

কোরান শিখলেও কোনওদিন যে তা পড়াতে হবে, ভাবেননি পূজা৷ ব্যক্তিগত কারণে সঙ্গীতা বেগম নিজে আর পড়াতে না পারলেও তাঁরই অনুরোধে শিক্ষক হন পূজা৷ সকালে নিজে পড়তে গেলেও সন্ধ্যাবেলা পুরোটাই তাঁর কেটে যায় ওই বাচ্চাদের সঙ্গে৷ বাচ্চাদের পড়ালেও পারিশ্রমিক নেন না৷ কারণ, প্রথমত, একেবারে নিজের ভালবাসা থেকে পড়ান তিনি৷ আর যেহেতু ওই খুদে পড়ুয়ারা গরিব ঘরের সন্তান, তাই শিক্ষিকার বেতন দেওয়ার সামর্থটুকুও নেই৷ এখন মন্দিরে পড়ানো হলেও প্রথমে কিন্তু একটি বাড়িতেই জড়ো হত ওই খুদেরা৷ কিন্তু শিক্ষিকার জনপ্রিয়তার জেরে ক্রমেই পড়ুয়ারা সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ অনেকে তো বসার জায়গাও পেত না৷ তখনই এলাকার বড়রা খুদে পড়ুয়াদের বসার ব্যবস্থা করেন মন্দির চত্বরে৷ তারপর থেকে সেখানেই চলছে কোরান পাঠ৷ খ্যাতনামা মুসলিম নেতা ৭০ বছরের হাজি জামিলুদ্দিন কুরেশি জানান, পূজার জন্য তিনি গর্বিত৷ তাঁর মতে, শিক্ষকের কোনও ধর্ম হয় না৷

এর আগে গীতাপাঠের এক প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছিল বারো বছরের মুসলিম বালিকা মরিয়ম সিদ্দিকি৷ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছিল সে৷ ভারতের বহুত্ববাদের এও এক অমূল্য নজির৷

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement