সুব্রত বিশ্বাস: অল্পবিস্তর নয়, জনসাধারণের ৩ হাজার কোটি টাকা নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ মাথায় নিয়েই চলে যেতে হল চিটফান্ড সংস্থার অধিকর্তাকে। সিবিআইয়ের (CBI) হাতে ধৃত আইকোর কর্তা অনুকূল মাইতি অসুস্থ হয়ে রবিবার সকালে ভুবনেশ্বরের জেলে মারা যান। সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁর ডায়াবেটিস ছিল, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন। শনিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ওড়িশার ডিজি (কারা) সন্তোষ উপাধ্যায় জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
বছর ১২ আগে বাংলায় তৈরি হওয়া একাধিক চিটফান্ড সংস্থার মধ্যে অন্যতম ছিল আইকোর। স্বল্প বিনিয়োগে অনেক বেশি মুনাফা লাভের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে টাকা আদায় করত অনুকূল মাইতির সংস্থা। শুধু এ রাজ্যেই নয়, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা থেকেও অর্থ সংগ্রহ করে ফুলেফেঁপে উঠেছিল সংস্থা। ২০১২-এ সারদা কেলেঙ্কারির ধাক্কায় অনেক চিটফান্ড সংস্থারই আর্থিক তছরূপের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। গোয়েন্দাদের তল্লাশি চলে আইকোর সংস্থায়ও।
২০১৫ সালে অনুকূল মাইতি, তাঁর স্ত্রী এবং সংস্থার দুই ডিরেক্টরকে গ্রেপ্তার করে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা (CID)। এরপর তিনি জামিনে মুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ওড়িশায় দায়ের হওয়া এক অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ততদিন চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে চলে গিয়েছে। একই মামলায় তাঁর স্ত্রী কণিকাদেবী জেলে থাকলেও তিনি বেশ কয়েকমাস আগে জামিন পান। অনুকূলবাবু কটক থেকে জামিন পেলেও বন্ডের টাকা না দিতে পারায় তিনি ঝারপড়া জেলে ছিলেন।
অনুকূল মাইতির সংস্থার বিরুদ্ধে মোট তিন হাজার কোটি টাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ ছিল। তার তদন্ত চলছিল। সিবিআই জানতে পারে যে শুধু পনজি স্কিমেই (Ponzi sceme scam) নয়, ফিক্সড ডিপোজিটের নামেও টাকা আদায় করেছিল এই সংস্থা। তাতেও হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছিল। শনিবার রাতে ঝারপড়া জেলে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয়। কলঙ্ক নিয়েই চলে যেতে হল জনসাধারণের টাকা নিয়ে প্রতারণার অন্যতম মুখ অনুকূল মাইতিকে। খবর পেয়ে রবিবার সকালে তাঁর স্ত্রী কণিকাদেবী ওড়িশা গিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.