সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল তবরেজ আনসারির। দিনকয়েক আগে পুলিশের হাতে আসে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ১২জনের উপর থেকে খুনের অভিযোগ তুলেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ময়নাতদন্তের নতুন রিপোর্টের পর ঘটনায় নয়া মোড়। তবরেজ আনসারির গণপিটুনির ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফের রুজু হল খুনের ধারা। বুধবার নতুন চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। তাতে ওই ১২জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের ধারাও যুক্ত করা হয়েছে।
গত সপ্তাহের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশই অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন নিহত তবরেজ আনসারির স্ত্রী শাহিস্তা পারভিন। স্বামীর খুনের অভিযুক্ত ওই ১২ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু না হলে আত্মহত্যার হুমকিও দেন। সুবিচারের আশায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান তিনি। এরপরই বুধবার ফের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। তাতে ফের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নতুন চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। তাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত ১৮ জুন দুজনের সঙ্গে জামশেদপুরে যাচ্ছিলেন তবরেজ৷ অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের খারসাওয়ান দিয়ে যাওয়ার সময় চোর সন্দেহে বেশ কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে৷ সুযোগ বুঝে দুই সঙ্গী পালিয়ে যায়৷ উন্মত্ত জনতার রোষের শিকার হন তবরেজ৷ স্থানীয়রা কেউ লাঠি আবার কেউ বা হাত দিয়ে তবরেজ ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করতে থাকে৷ আক্রমণকারীদের কাছে কাকুতি মিনতি করলেও কোনও লাভ হয়নি৷ একটানা প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে এভাবেই তবরেজের উপর চলে অকথ্য অত্যাচার৷ মারধরের পাশাপাশি তবরেজকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয় বলেও অভিযোগ৷ তবরেজকে না বাঁচিয়ে, অমানবিকভাবে তাঁর উপর অত্যাচারের ছবি-ভিডিও মোবাইল বন্দি করতেও দেখা গিয়েছে অনেককেই৷ সেই ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে৷ এরপর পুলিশই তবরেজ আনসারিকে উদ্ধার করে। তাঁকে প্রথম কয়েকদিন থানাতেই রাখা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ২২ জুন সেখানেই প্রাণ হারান তবরেজ। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে একজন আত্মসমর্পণ করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয় দুই পুলিশ আধিকারিককেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.