সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু ভক্তদের ভালবাসার দান নয়, উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতেও ভালমতো যোগ ছিল ভোলে বাবার সংগঠনের। আর সেখান থেকে আসত বিপুল পরিমাণ টাকা। উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পদপিষ্ট হয়ে ১২১ জনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে উঠে আসছে এমনি চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেদিনের মর্মান্তিক ঘটনায় তদন্তে নেমে একাধিক জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যাঁদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত দেবপ্রকাশ মধুকর। জানা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিই ছিলেন ভোলে বাবার সংগঠনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম।
মঙ্গলবার হাথরাসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর স্বজনহারাদের তরফে দুটি দাবি তোলা হচ্ছে। প্রথমত, এই ঘটনার তদন্তভার কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হোক। এবং দ্বিতীয়ত গ্রেপ্তার করা হোক সূরজ পাল ওরফে ভোলে বাবার। যদিও এই ঘটনার তদন্তে নেমে এই সৎসঙ্গ সম্পর্কে একাধিক তথ্য আসতে শুরু করেছে পুলিশের হাতে। শনিবার পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এই মামলার মূল অভিযুক্ত দেবপ্রকাশ মধুকর। জানা যাচ্ছে, হাথরসে সৎসঙ্গ আয়জনের মূল দায়িত্বে ছিলেন এই ব্যক্তি। পুলিশের দাবি, এই ব্যক্তি বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। এবং ভোলে বাবার সংগঠনের আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য তহবিল সংগ্রহ করাই ছিল ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য।
হাথরাসের পুলিশ সুপার নিপুণ আগরওয়াল জানান, গত কয়েক মাসে মধুকরের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখার পাশাপাশি তাঁর নামে যে সব আর্থিক লেনদেন হয়েছে সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মধুকরকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনও জানানো হয় আদালতে। তবে বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার পর পুলিশের তরফে যে এফআইআর দায়ের করা হয় সেখানে প্রথম নামটি ছিল মধুকরের। ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দেয় সে। তাঁর খোঁজ পেতে ১ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। যোগাযোগ করা হয়, দিল্লি, হরিয়ানা ও রাজস্থান পুলিশের সঙ্গেও। যদিও তাঁর কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। এরই মাঝে শনিবার দিল্লির নজফগড় থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন মধুকর। এর পর দিল্লি পুলিশের তরফে অভিযুক্তকে তুলে দেওয়া হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশে হাতে।
এদিকে কীভাবে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল তাঁর প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মঙ্গলবারের ওই অনুষ্ঠানে ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতের অনুমতি দিয়েছিল পুলিশ। তবে বাস্তবে সেখানে জমা হন আড়াই লাখের বেশি মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি অনুযায়ী, অনুষ্ঠান শেষ হলে ভোলে বাবার কাছে যাওয়ার জন্য ভক্তেরা ‘মারামারি’ শুরু করে দেন। কে আগে তাঁর কাছে পৌঁছবেন, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি চলে। কিন্তু, ভোলে বাবার সহযোগীরা লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান। সরিয়ে দেন ভিড়। যার ফলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়ে। অনেকেই এই দুর্ঘটনার জন্য পুলিশের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন। তাঁদের মতে, এত বড় সমাবেশের নিরাপত্তায় ছিলেন মাত্র ৪০ জন পুলিশকর্মী। ভিড় সামাল দিতে ব্যর্থ তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.