সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ। লখনউয়ের পর এবার ফিরোজাবাদ। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক প্রতিবাদীর। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছ’জন। গুলিতে জখম আরও আট প্রতিবাদী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার CAA বিরোধী প্রতিবাদের আঁচে জ্বলছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের খাসতালুক গোরক্ষপুর। মিছিল আটকাতেই পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি।পাল্টা প্রতিবাদী মিছিলের উপর লাঠি চালায় পুলিশ।জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসও ছুঁড়তে হয় বলে অভিযোগ। একইভাবে ফিরোজাবাদ, বাহরাইচ, বুন্দলশহর, হাপুরেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। অশান্তি রুখতে বন্ধ রাখা হয়েছে স্কুল-কলেজ। ২০ জেলায় বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবাও।
বৃহস্পতিবার বেলা বাড়তেই লখনউয়ের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। পুরনো লখনউ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি ঘটে। হুসেনগঞ্জ ও কুনেশ্বর এলাকায় বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। সম্বল জেলায় বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিবাদীরা। লখনউ শহরে পুলিশ পোস্টের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে। পাল্টা বিক্ষোভ লক্ষ্য করে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। লাঠি চালাতেও বাধ্য হয় তাঁরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে ২০ জনকে হেফাজতে নিয়েছে লখনউ পুলিশ। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ায় এক কংগ্রেস নেতাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।এমনকী এক প্রতিবাদীর মৃত্যুও হয়।
এরপর ফের শুক্রবার বেলা বাড়তেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে বিপর্যন্ত হয় গোরক্ষপুর, বাহরাইচ-সহ একাধিক এলাকা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিল।কিন্তু পুলিশ তাঁদের উপর হামলা চালায়। রাস্তায় ফেলে বিক্ষোভকারীদের বেধরক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে পুলিশের পাল্টা দাবি, তাঁদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করেছিল বিক্ষোভকারীরা। পাল্টা তাঁদের হঠাতেই লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এদিন পুলিশের সামনেই একের পর এক গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি সামনে এসেছে। বুন্দলশহরেও মিছিলে লাঠি্চার্জের অভিযোগ উঠেছে।সেখানেও গাড়়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি সামনে এসেছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় পুলিশি পোস্ট।
গত সপ্তাহেই সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছে নাগরিকত্ব (সংশোধি্ত) বিল। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরের পর তা আইনেও পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই বিতর্কিত আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এই আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাবড়-তাবড় বিশিষ্ট জনেরাও। বৃহস্পতিবার কলকাতা, দিল্লি, মু্ম্বই, বেঙ্গালুরু-সহ ১০টি শহরে নাগরিকত্ব (সংশোধিত)আইনের(CAA)বিরুদ্ধে পথে নামতেন বিশিষ্টজনেরা। কিন্তু তার আগেই দেশজুড়ে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল প্রশাসন। তবে দেশজুড়ে বাড়তে থাকা আন্দোলনের জেরে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.