ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ষণের পরীক্ষায় টু ফিঙ্গার টেস্ট (Two Finger Test) নিষিদ্ধ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তা সত্বেও এক নাবালিকার টু ফিঙ্গার টেস্ট করার অভিযোগ উঠল কোটার এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অবিলম্বে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে কোটার পকসো আদালত। নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই পকসো (POCSO) আদালত জানতে পারে, নাবালিকার টু-ফিঙ্গার টেস্টের নির্দেশ দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক।
গত ৪ জানুয়ারি কোটার পকসো আদালতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের মামলার বিচার শুরু হয়। বিচারক দীপক দুবে জানান, চিকিৎসকের বয়ান ও মেডিক্যাল রিপোর্ট- দু’টি খতিয়ে দেখে বোঝা যাচ্ছে তিনি নাবালিকার টু ফিঙ্গার টেস্টের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশ মেনে নাবালিকার ধর্ষণের এই পরীক্ষা করাও হয়। তবে ধর্ষকের অভিযোগ উঠেছিল যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে, তাকে খালাস করে দিয়েছে পকসো আদালত। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন পকসো আদালতের বিচারক।
মামলার রায়ে বিচারক বলেছেন, “শুধু আইনের দৃষ্টিতে নয়, মনুষ্যত্ব ও মানুষের সম্মানের পক্ষেও অত্যন্ত অপমানজনক বিষয় এই টু ফিঙ্গার টেস্ট। বিশেষত একজন চিকিৎসকের পেশার একেবারে পরিপন্থী।” সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালতের রায়ের বিষয়টিও উল্লেখ করেছে কোটার আদালত। অক্টোবর মাসেই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) রায় দিয়েছিল, টু ফিঙ্গার টেস্ট একেবারে অবৈজ্ঞানিক। এই টেস্ট করলে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
ধর্ষণ ও খুনের একটি মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের মামলায় এই আদালত বহুবার টু ফিঙ্গার টেস্টের বিরুদ্ধে অভিমত দিয়েছে। এই পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। নির্যাতিতাদের পরীক্ষা করার এটা একটা ‘ইনভেসিভ মেথড’। অর্থাৎ জোর করে শরীরের ভিতরে আঙুল প্রবেশ করানো হয় পরীক্ষার সময়ে। এর ফলে নির্যাতিতা আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাই ধর্ষণের মামলায় কোনওভাবেই এই টু ফিঙ্গার টেস্ট যেন করা না হয়।” তিনি আরও বলেন, “যৌন জীবনে সক্রিয় একজন মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ করলে তাঁর কথা বিশ্বাস করা যায় না, এই চিন্তাভাবনা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা ও লিঙ্গবৈষম্যেরই পরিচয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.