সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে ১২,৬২২ কোটি টাকা নয় (১১,৩০০ কোটির পর আরও ১,৩২২ কোটি টাকার তছরুপের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে), তার দ্বিগুণেরও বেশি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে। এমনটাই দাবি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের। ওই বৈদ্যুতিন মাধ্যমটি দাবি করেছে, সবমিলিয়ে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটিতে। যার মধ্যে ৯ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের জমানায়, আর ২০ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে এনডিএ আমলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জমানায়।
এই বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই অভিযোগ উঠেছে, দুই সরকারের জমানাতেই সাধারণ মানুষের জমানো টাকা নয়ছয় হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ২০১১ থেকে এই আর্থিক গরমিলের সূত্রপাত। ২০১১-তে কংগ্রেস জমানায় ৭৫০ কোটি টাকা, ২০১২-তে ১০০টি এলওইউ মারফত ২৩০০ কোটি টাকা, ২০১৩-তে ২৫০টি এলওইউ ৪০০০ কোটি টাকা, ২০১৪-য় ১২৫টি এলওইউ-র সাহায্যে ২০০০ কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে একটি প্রতিবেদনে। সংবাদমাধ্যমটি এও দাবি করেছে যে তাদের কাছে এই বিষয়ে যাবতীয় নথিও রয়েছে। ওই নথি মোতাবেক নাকি ইউপিএ আমলে ৯ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছিল পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে। পরে এনডিএ জমানায় ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি হয় সেখানে।
অসরকারি সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০১৫-তে ৩৫০টি এলওইউ-র সাহায্যে ৪২০০ কোটি টাকা, ২০১৬-তে ৭০০০ কোটি ও ২০১৭-তে ৯৫০০ কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে গিয়েছে। মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের জন্য মামা-ভাগ্নে কোনও নিয়মই মানেননি। জানেন কি, কীভাবে দিনের পর দিন এই কেলেঙ্কারি চলেছে? সহজে বুঝিয়ে বললে- নীরব মোদি প্রথম বছর ব্যাংক থেকে ১০০ টাকা ধার নিতেন। পরের বছর সেই টাকা সুদ-সমেত মিটিয়ে দেবেন বলে। এবার পরের বছর ফের ব্যাংক থেকে ২০০ টাকা ধার নিতেন ও সেই টাকা থেকে গতবছরের ১০০ টাকা মিটিয়ে দিতেন। পরের বছর ফের ৪০০ টাকা ধার নিতেন ও আগের বছরের ২০০ টাকা ফিরিয়ে দিতেন। এভাবে প্রতি বছরই মোটা টাকার ফাঁকি দিতে দিতে ঋণের পাহাড় গড়ে তুলেছিলেন নীরব মোদি। ২০১১-র ৭৫০ কোটি টাকাই ২০১৮-তে ২৯ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির পাহাড়ে পরিণত হয়।
এদিকে বুধবার পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের সিইও সুনীল মেহতাকে প্রায় ৫ ঘণ্টা জেরা করেন সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (SFIO)-এর অফিসাররা। মেহতা ও তাঁর সঙ্গে ব্যাংকের কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিককে এদিন মুম্বইয়ে SFIO-র অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। তাঁকে জেরা করে এই বিপুল আর্থিক দুর্নীতির শিকড়ের খোঁজ পেতে চাইছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। কিন্তু এতদিন যেখানে এই কেলেঙ্কারি সবমিলিয়ে ১২,৬২২ কোটি টাকার বলে মনে করা হচ্ছিল, সেখানে টাকার অঙ্কটা আজ একলাফে অনেকটাই বেড়ে গেল। এর আগে ১ মার্চ মেহতাকে প্রায় ৮ ঘণ্টা মুম্বইতে জেরা করেন ইডি অফিসাররা। সিবিআইও তাঁকে জেরা করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.