সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সর্বজনবিদিত। কিছুদিন আগে আমেরিকার হিউস্টনে ট্রাম্পের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখেও। যদিও হিউস্টনের ওই সভায় দাঁড়িয়ে, ‘আপ কি বার ট্রাম্প সরকার’ স্লোগান তুলে কিছুটা বির্তকের মুখে পড়তে হয়েছিল নরেন্দ্র মোদিকে। দেশজুড়ে উঠেছিল সমালোচনার ঢেউ। সময়ের কালক্ষেপে সেসব এখন অতীত হলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নতুন বিমান নিয়ে ফের বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আগামী বছর জুন মাস থেকে নরেন্দ্র মোদি অত্যাধুনিক ওই বিমান ব্যবহার করবেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, এর খরচ শুনে এখন থেকেই চোখ কপালে উঠেছে বিরোধীদের। দেশের অর্থনীতি যখন পাঁচ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে তখন এই ধরনের বিলাসিতা সাজে না বলেই কটাক্ষ করছে তারা। তবে শুধু প্রধানমন্ত্রী নয়, আমেরিকার এয়ারফোর্স ওয়ানের ধাঁচে তৈরি হওয়া ওই দুটি বিমান ব্যবহার করবেন দেশের রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতিও। আর এয়ার ইন্ডিয়ার জায়গায় এই বিমানগুলি দেখভালের দায়িত্ব থাকবে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে।
আজ পর্যন্ত এয়ারফোর্স ওয়ানে ব্যবহৃত প্রযুক্তি কোনও দেশকে বিক্রি করেনি আমেরিকা। কিন্তু, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সখ্যতা সেই বাধা দূর করেছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা দপ্তরের দাখিল করা তথ্য অনুযায়ী মার্কিন বিমান নির্মান সংস্থা বোয়িং তাদের ডালাসের কারখানায় ওই বিমানদুটি তৈরি করছে। এর প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য ভারতীয় টাকায় প্রায় ১ হাজার ৩৩০ কোটির চুক্তি হয়েছে সংস্থাটির সঙ্গে। জানা গিয়েছে, অত্যাধুনিক এই বোয়িং দুটিতে এসপিএস ও এলআইএআরসিএম প্রযুক্তি আছে। যার ফলে আকাশে ওড়ার সময় কেউ ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়লেও বিমানটির কোনও ক্ষতি হবে না। প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাডার এমন জ্যাম করে দেওয়া হবে যে বিমানটির হদিশ পাবে না ক্ষেপণাস্ত্র। জায়গা এতটাই থাকবে যে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের মিনি সংস্করণ তৈরি করা যাবে বিমানের ভিতরেই। পৃথিবীর যে কোনও শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুবিধা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে উড়ন্ত অবস্থায় বিমানে তেল ভরার প্রযুক্তিও। এর ফলে কোনও এয়ারপোর্টে না নেমেই গোটা বিশ্ব ঘুরে ফেলতে পারবে বিমানটি।
এতদিন ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৪৭-৪০০ বিমানকে কাজে লাগানো হত। কিন্তু, আগামী বছরের জুন মাস থেকেই বদলে যাবে সেই নিয়ম। নতুন বিমানের ককপিটে থাকবেন বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত পাইলটরা। এর পাশাপাশি রাখা হচ্ছে অত্যাধুনিক পরিবেষার বিভিন্ন ব্যবস্থা। জানা গিয়েছে এই বিমানটির রক্ষণাবেক্ষণ ও তেল থেকে শুরু করে সমস্ত সুবিধার জন্য ঘণ্টাপ্রতি প্রায় এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। দেশের আর্থিক অবস্থায় যা বিলাসিতা বলেই মনে করছে বিরোধী। যদিও শাসক শিবিরের দাবি, যে দেশে সবসময় হামলা চালানোর চেষ্টা করে প্রতিবেশী দেশ। যেখানকার একজন প্রাক্তন ও এক ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে দেশের মধ্যে খুন হতে হয়। সেখানে দেশের শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তার জন্য এটুকু পদক্ষেপ তো নিতেই হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.