ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেন যুদ্ধ আবহে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ থেকে তিনি যাবেন অস্ট্রিয়ায়। ৪১ বছর প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সেদেশে পা রাখবেন নমো। তাঁর এই সফর ঘিরে উচ্ছ্বসিত রাশিয়া-অস্ট্রিয়া দুদেশই। কূটনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও বন্ধুত্ব আরও মজবুত করতে মোদিকে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছে মস্কো ও ভিয়েনা। এই দুই সফরকেই ঐতিহাসিক বলে ধন্যবাদ জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন নমোও।
গত মাসেই শোনা গিয়েছিল রাশিয়া যেতে পারেন মোদি। কেবল মস্কোই নয়, অস্ট্রিয়া সফরেও তাঁর যাওয়া নিয়ে গুঞ্জন ছিল। অবশেষে ৪ জুলাই বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় ৮ থেকে ১০ জুলাই রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। ৮ ও ৯ জুলাই তিনি রাশিয়ায় থাকবেন। যোগ দেবেন ২২তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে। পরের দিন অর্থাৎ ৯ তারিখ অস্ট্রিয়া যাবেন মোদি। ১০ তারিখ সেখান থেকেই দেশে ফিরবেন তিনি।
আর মোদির এই সফর নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া। শনিবার নমোর রুশ সফর নিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেসকোভ জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই সফর দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মস্কোয় মোদির যে অনুষ্ঠান হবে তা ব্যাপক সাড়া ফেলবে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে বৈঠক হবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম মস্কোয় যাবেন প্রধানমন্ত্রী। গত মার্চে মস্কোর তরফে মোদিকে সেদেশে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। প্রসঙ্গত, দুবছর ধরে চলা এই যুদ্ধ থামানোর জন্য কূটনৈতিক স্তরের আলোচনার ওপর জোর দিয়েছে ভারত। তবে এই সংঘাত নিয়ে সরাসরি কখনও মস্কোর বিরোধিতা করেনি নয়াদিল্লি। মোদি শেষবার রাশিয়া গিয়েছিলেন ২০১৯ সালে। যদিও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পাঁচদিনের মস্কোয় গিয়েছিলেন। মোদির রুশ সফরে কড়া নজর রাখছে আমেরিকাও।
এদিকে, প্রায় চার দশক পর প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অস্ট্রিয়ায় পা রাখবেন মোদি। তাঁর এই সফর নিয়ে সেদেশের চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার গতকাল এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘আমাদের দেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানানোর জন্য খুবই উচ্ছ্বসিত। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের নেতা ভিয়েনায় পা রাখবেন। দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫ বছর উদযাপন করতে প্রায় ৪০ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী এদেশে আসছেন। এটা একটা উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর ও বহু রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার বিষয়ে কথা বলার সুযোগ থাকবে আমাদের কাছে।’ কার্ল নেহামারকে ধন্যবাদ জানিয়ে মোদি রবিবার এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘অস্ট্রিয়ায় ঐতিহাসিক সফরে যেতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। আমি দুদেশের মধ্যে বন্ধন মজবুত এবং সহযোগিতার নতুন উপায় খুঁজতে আলোচনার অপেক্ষায় রয়েছি।’
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শেষ বার অস্ট্রিয়ায় গিয়েছিলেন। নেটো-র সদস্য দেশ নয় অস্ট্রিয়া। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের মাঝেও নয়াদিল্লির মতো রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বহাল রেখেছে ভিয়েনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও ভারত ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে কথা হতে পারে। দুদেশ মিলিতভাবে শান্তি ফেরানোর পথ খুঁজতে পারে। তাছাড়া মোট ৩৫টি ভারতীয় প্রযুক্তি সংস্থা রয়েছে অস্ট্রিয়ায়। ভারতে স্টার্ট আপ, উৎপাদন ও তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোই প্রধানমন্ত্রীর সফরের লক্ষ্য। এই সকল বিষয় নিয়েই অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মোদি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.