ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে করোনা ত্রাস। তাবড় রাষ্ট্রনেতা থেকে বলি-সেলেব- সোশ্যাল মিডিয়ায় সদা তৎপর সকলেই। যে যাঁর মতো করে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলছেন। সরকারও প্রতিদিন বাড়াচ্ছে তৎপরতা।
আজ, বৃহস্পতিবার করোনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার ২৪ ঘণ্টায় দেশের দশটি রাজ্যে মোট ২৮ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। একই দিনে দেশে নতুন করে ২৮ জনের দেহে করোনা ভাইরাস মেলায় আতঙ্কিত কেন্দ্র। যদিও এই আক্রান্তদের মধ্যে সাতজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক রয়েছেন। এঁরা হায়দরাবাদে এসেছিলেন। রয়েছেন একজন ব্রিটিশ নাগরিকও। বাকি যঁারা আক্রান্ত হয়েছেন তঁারাও অধিকাংশ করোনা অধ্যুষিত দেশগুলি থেকে ফিরেছেন। সবমিলিয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭০। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসেবে আক্রান্ত ১৫১। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বুধবার দেশের সব আধা সেনাবাহিনীকে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নিতে বলেছে। একদল বিশেষজ্ঞের কথায়, চিন-ইতালি-ইরানের পর পরবর্তী করোনা হটস্পট ভারত।
পরিসংখ্যান বলছে, বুধবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫১। মৃত তিন। মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রির্সাচের একটি আলোচনায় জানা গিয়েছে, প্রায় ১৩০ কোটির দেশে একবার করোনা গ্রাস করতে শুরু করলে, খুব সমস্যায় পড়তে হবে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনও জন সমাবেশ থেকে দূরে থাকুন। যতটা সম্ভব বাড়িতে সময় কাটান। বারবার হাত-মুখ ধুয়ে পরিষ্কার রাখুন নিজেকে। আপনার একটা ভুল কেড়ে নিতে পারে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রির্সাচের (আইসিএমআর) প্রাক্তন প্রধান ডাঃ টি ইয়াকোব জনের কথায়, ‘‘আপাতত দেখতে লাগছে দেড়শো মানুষের করোনা পজিটিভ এসেছে। সতর্ক না-হলে সংখ্যাটাই ১৫ এপ্রিলের মধ্যে ১৫০০ হবে। এখন একজন করোনা রোগীও ধ্বংসের কারণ হতে পারেন।’’ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গণস্বাস্থ্য পরীক্ষা দরকার। সেভাবেই তৈরি থাকতে হবে ভারতকে। তাতে আইসিএমআর জানাচ্ছে, দিনে গড়ে আট হাজার মানুষের পরীক্ষার নমুনা দেখার ব্যবস্থা রয়েছে এদেশে। যা ভারতের মতো দেশে তা নগণ্য।
দেশের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বাণিজ্যনগরী মহারাষ্ট্রেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখনও পর্যন্ত সেখানে ৪২ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ টোপ জানিয়েছেন, এখন দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্ষেত্রেই মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। তৃতীয় পর্যায়ে পৌঁছলে কী হবে, সে নিয়ে মন্ত্রক চিন্তায় রয়েছে। যদিও দেশের ভাইরোলজিস্টরা বলছেন, ভারতের মতো অতি-ঘনবসতিপূর্ণ দেশে তৃতীয় পর্যায় নাকি আসবেই না। সরাসরি চতুর্থ পর্যায়ে ঢুকে পড়বে ভারত।
কোন কোন এলাকাকে ঘনবসতিপূর্ণ বলতে পারি?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেখানে প্রতি স্কোয়ার কিলোমিটারে ৪২০ জনের বেশি মানুষের বাস সেই এলাকায় প্রচার চালান সবার আগে। তাছাড়াও গরিব-গুর্বোরা যেখানে বসবাস করছেন, তঁাদের থেকেও সংক্রমণ বাড়তে পারে। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বস্তি এলাকা নোংরা হয়ে থাকে। চিন বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে মানুষ বেশি থাকলেও দেশগুলো তুলনায় পরিষ্কার। তবুও দু’টো দেশকেই করোনা গ্রাস করেছে। তাই ভারতীয়দের নিজেকে আইসোলেশনে রাখাটা জরুরি।বিশ্ব-মহামারী করোনায় বিশ্বের ছবিটা বেশ ভয়ংকর। কারণ, প্রায় দু’লক্ষ মানুষ এখন করোনা আক্রান্ত। মৃত প্রায় আট হাজার। দিনে দিনে ছবিটা আরও ভয়ংকর হচ্ছে। আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পড়ছে বিশ্বের অর্থনীতি। ভারতেরও। ভবিষ্যতে কী হবে সে চিন্তা না করে, বিশেষজ্ঞদের দাবি, নিজের দায়িত্বে নিজেকে পরিষ্কার রাখুন।
[আরও পড়ুন: হাতে গোনা ল্যাব-স্বাস্থ্য পরীক্ষায় মোটা খরচ, করোনা মোকাবিলায় কতটা প্রস্তুত ভারত?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.