ছবি: ফাইল
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্ব আইন ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকেও ছাড়লেন না নরেন্দ্র মোদি।
রাজ্যপাল ধনকড়ের পথে হেঁটেই এদিন নরেন্দ্র মোদি তুলে এনেছেন ২০০৫ সালের লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বক্তব্য। বলেছেন, ”এই মমতাদিদিই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য লোকসভায় দরবার করেছিলেন।” উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই রাজ্যপাল তাঁর টুইটারে ২০০৫ সালের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন।
রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গোটা বক্তব্যটাই ছিল নাগরকিত্ব আইন নিয়ে বিজেপি সরকার কী করতে চাইছে, তার পক্ষে নানাবিধ ব্যাখ্যা। আগাপাশতলা নাগরকিত্ব আইনের পক্ষে সওয়াল করে মোদি এদিন তাঁর বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে বলেছেন, ”ভুয়ো ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে।মিথ্যে অভিযোগ কেন আনছে বিরোধীরা? দেশকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র করছে বিরোধীরা।কাদের ভয় পাচ্ছেন ওঁরা? কংগ্রেস যে পথে এগিয়েছিল, আমরা তো সেকথাই বলছি।” এরপরই আচমকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে সরাসরি আক্রমণ করেন। ভরা জনসভায় আচমকা তিনি বলে ওঠেন, ”আর আমাদের মমতাদিদি কলকাতা থেকে সরাসরি রাষ্ট্রসংঘে পৌঁছে গেছেন। কিন্তু এই মমতাদিদিই আগে সংসদে বলেছিলেন, ‘শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে হবে।’ আচমকা কী হল দিদির? মমতাদিদি, আপনার হঠাৎ কী হল?”
রাজনৈতিক মহলের ব্যখ্যা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই বক্তব্য থেকে একটা বিষয় এদিন স্পষ্ট হয়ে গেল, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের আক্রমণের ভরকেন্দ্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস। বিশেষ করে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রথম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে কলকাতায় লাগাতার আন্দোলন করছেন, তাতে গোটা বিরোধীদের অভিমুখটা এখন চলে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। বস্তুত বিরোধীদের এককাট্টা করতে তিনি যে অনেকটাই সফল, তা আরজেডি ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অবস্থান থেকে স্পষ্ট। এমনকী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও তৃণমূল নেত্রীর মতোই অবস্থান নিয়েছেন।
বস্তুত পশ্চিমবঙ্গ-সহ ৯টি রাজ্য সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে তারা কোনওভাবেই নাগরিকত্ব আইন লাগু করতে দেবে না। এই ক্ষেত্রে বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন এটা এতদিন বিজেপির দিল্লির নেতারা লাগাতার মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করছিলেন। এদিন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বাস্তবিকই তা অন্য মাত্রা নিল। এখন দেখার, মোদির এই বক্তব্যের পর রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব আর কতটা বিরোধী অবস্থান নিতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.