সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পুরো পৃথিবী আজ করোনা ভাইরাসের কারণে আতঙ্কিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও এত দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি যা আজ করোনার কারণে হয়েছে। গত দুমাস ধরে দেশের নাগরিকরা সারা বিশ্বের ঘটনা দেখেছেন। এখানেও এই ভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আপ্রাণ লড়াই করছেন সবাই। এই পরিস্থিতিতে আমি আপনাদের কাছে কিছু চাইতে এসেছি। এর আগেও আমি আপনাদের কাছে যা চেয়েছি তা আপনারা দিয়েছেন। তাই আগামী কয়েক সপ্তাহ আপনাদের থেকে চাইছি। খুব জরুরি না থাকলে বাড়ি থেকে বের হবেন না। যতটা পারবেন বাড়ি থেকেই কাজ করবেন। কোনও কারণে বাইরে বের হলে ভিড় এড়িয়ে চলুন।’ বৃহস্পতিবার রাত আটটার সময় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে এই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
সবাইকে সতর্ক করে তিনি আরও বলেন, ‘সংযম ও সংকল্পের মাধ্যমে এই মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে হবে আমাদের সবাইকে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি যে নির্দেশ দিচ্ছে তা মেনে চলতে হবে। আমরা নিজেদের যেমন সংক্রমিত হওয়া থেকে বাঁচাব। তেমনি অন্যদের মধ্যেও এই রোগ কোনও ভাবে যাতে সংক্রমিত না হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। জরুরি পরিবেষার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের বাইরে বের হতেই হবে। কিন্তু, তার বাইরে থাকা অন্যদের কাছে বাইরে বের না হতে অনুরোধ করব। কারণ, জনবহুল এলাকায় বেরোব আর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হবে না তা হতে পারে না। তাই এই ধরনের জায়গাগুলি এড়িয়ে যেতে হবে। আর আগামি ২২ মার্চ সবাইকে জনতা কারফিউ (Janta Curfew) পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি। ওইদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সমস্ত দেশবাসীকে এই কারফিউতে অংশ নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’
এই বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলির কাছে কেন্দ্রকে সহযোগিতা করার জন্যও আবেদন জানিয়েছেন তিনি। প্রবীণ মানুষদের এই কয়েকটি সপ্তাহ বাড়ি থেকে না বেরোনোরও পরামর্শ দিয়েছেন। করোনা ভাইরাসের জেরে ভারতের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বলে আজ স্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশবাসীকে ধৈর্য্য ধরতে বলার পাশাপাশি জনতার দ্বারা এই জনতার কারফিউতে অংশ নেওয়ার কথা বলেন। এখন থেকেই তার প্রচার করার কথা বলেন। রাজ্য সরকারগুলিকে রবিবার সকাল সাতটায় সাইরেন বাজিয়ে কারফিউ জারি করার আর রাত নটায় ফের সাইরেন বাজিয়ে কারফিউ তোলার ঘোষণা করতে আহ্বান জানান। আর দেশবাসীকে বলেন, ‘রবিবার বিকেল পাঁচটার সময় বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টা ও হাততালি বাজিয়ে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের ধন্যবাদ জানান।’ সবাইকে একজোট হয়ে লড়াই করার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার মালিকদের কাছে মানবিকতার খাতিরে অনুপস্থিত কর্মীদের মাইনে না কাটারও আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি খাদ্যশস্য নিয়েও সবাইকে আশ্বস্ত করেন তিনি। দেশে যথেষ্ট পরিণাম খাদ্য মজুত রয়েছে তাই এই বিষয়ে ভয়ের কিছু নেই বলেও উল্লেখ করেন। করোনা ভাইরাসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অর্থনীতিকে সামাল দিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হবে বলেও আশ্বস্ত করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.