সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হায়দরাবাদের বনাঞ্চল সাফাই নিয়ে এবার কংগ্রেসকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বললেন, তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সরকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছে। তারা এখন বনাঞ্চল ধ্বংসে ব্যস্ত। সম্প্রতি অরণ্য ধ্বংস করে নগরজীবনের উন্নয়নের স্বার্থে হায়দরাবাদের জঙ্গলে শুরু হয়েছিল বুলডোজার চালানো। একমাত্র রুখে দাঁড়িয়েছিল হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি। কিন্তু বনাঞ্চলের ভিতর থেকে ভেসে আসা ময়ূরদের আর্তনাদ ধাক্কা দেয় সুপ্রিম কোর্টকে। আপাতত জঙ্গল কাটায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই রায়ে অন্তত কিছুদিনের জন্য স্বস্তিতে বন্যপ্রাণীর দল।
আজ সোমবার হরিয়ানার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মোদি। সেখানে তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে হায়দরাবাদের বনাঞ্চল সাফাইয়ের প্রসঙ্গ। রেবন্ত রেড্ডির কংগ্রেস সরকারকে তোপ দেগে নমো বলেন, “তেলেঙ্গানার মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছে কংগ্রেস সরকার। জঙ্গল ধ্বংস করতে বুলডোজার চালাতেই এখন তারা ব্যস্ত। পরিবেশের ক্ষতি করছে। পশু-পাখিদের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। এটাই তাদের কাজের পদ্ধতি। আমরা আবর্জনা থেকে শক্তি তৈরি করার চেষ্টা করছি আর কংগ্রেস বন ধ্বংস করছে।”
সমস্যার শুরু সপ্তাহখানেক আগে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনতিদূরে ৪০০ একর কাঞ্চা গাছিবৌলি এলাকার জমি কাটা শুরু হয়। এই এলাকায় প্রচুর জীববৈচিত্র্য রয়েছে। তা ধ্বংস করা হলে সেই বৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে রুখে দাঁড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। ওই এলাকাকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার দাবিও ওঠে। আন্দোলনে নামলে তেলেঙ্গানা পুলিশ পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জ করে। এরপর অনশনে বসেন ছাত্রছাত্রীরা। এনিয়ে সোশাল মিডিয়া নিন্দায় সরব হন সেলিব্রিটিরাও। তেলেঙ্গানা সরকার পালটা যুক্তি হিসেবে জানায়, হায়দরাবাদের অনেক জায়গাতেই সাপ, ময়ূর রয়েছে। কিন্তু সবকিছুকে বনাঞ্চল বলা যায় না।
জানা গিয়েছে, কাঞ্চা গাছিবৌলি এলাকার অরণ্য ধ্বংস রুখতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। এর মধ্যেই যুক্তি-তর্কের বাঁধ ভেঙে দিয়েছিল বাস্তুহারা ময়ূরদের ক্রন্দন! জঙ্গলের আলো, বুলডোজার শব্দ ছাপিয়ে গিয়েছিল সেই কান্না। আর তাতেই সম্ভবত অরণ্য ধ্বংস রোধের গুরুত্ব বুঝেছে শীর্ষ আদালত। গত বৃহস্পতিবার এই জঙ্গল কাটায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তেলেঙ্গানা সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, কী এমন দরকার পড়ল, যাতে ৪০০ একর জমির গাছ এত দ্রুত কেটে ফেলতে হচ্ছে? শীর্ষ আদালতে কী জবাব দেয় তেলেঙ্গানা সরকার, সেদিকেই নজর। সুপ্রিম কোর্ট অরণ্যচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর আশ্বস্ত হয়ে অনশন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরেছেন পড়ুয়ারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.