সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ এড়াতে ফের বড়সড় পদক্ষেপ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে অর্থাৎ বুধবারের সূচনালগ্নেই দেশজুড়ে ২১ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করলেন তিনি। পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে ১৫ হাজার কোটি টাকার অনুদানের কথাও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার জনতা কারফিউয়ের কথা ঘোষণা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এবার তার উপর ভিত্তি করেই দেশজুড়ে লকডাউনের কথা ঘোষণা করলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “একদিনের জনতা কারফিউ দেখিয়ে দিয়েছে যখন দেশের উপর সংকট আসে, তখন কীভাবে সবাই মিলে একজোট হয়ে তার মোকাবিলা করে। আপনারা সবাই জনতা কারফিউ সমর্থন করেছেন। তার জন্য ধন্যবাদ। করোনা মহামারির কথা আপনারা সংবাদমাধ্যমে দেখছেন, শুনছেন। এও দেখছেন অনেক দেশ কীভাবে এই মহামারির সঙ্গে যুজছে। এই দেশও যে চেষ্টা করছে না, এমন নয়। বিশেষজ্ঞকরা বলছেন এই মহামারি মোকাবিলার একমাত্র উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। এই সময় নিজের ঘরে বন্দি থাকুন। এর থেকে ভাল উপায় আর নেই। সংক্রমণ রুখতে এটাই একমাত্র পন্থা। কেউ কেউ ভাবছেন সামাজিক দূরত্ব রোগীদের জন্য দরকার। কিন্তু তা নয়। এটা সবার জন্য জরুরি। এই সময় এতটুকু ভুল বড় সমস্যায় পড়বেন আপনি, আপনার পরিবার তথা গোটা দেশ। এমন চলতে থাকলে গোটা দেশকে যে কত ভারী মূল্য চোকাতে হবে, তার আন্দাজ করাও মুশকিল।”
গত ২ দিনে দেশের অনেকাংশ জায়গায় লকডাউন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে রাজ্য সরকারগুলির লকডাউনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। করোনা ঠেকাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে রাত ১২টা থেকে দেশজুড়ে সম্পূর্ণ লকডাউনের ঘোষণা করেন তিনি। দেশের সমস্ত রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে লকডাউন করা হচ্ছে। এটিকে এক ধরনের কারফিউ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, “করোনা থেকে বাঁচতে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য অবশ্যই দেশকে আর্থিক মূল্য দিতে হবে। কিন্তু প্রত্যেক ভারতীয়র জীবন বাঁচানো এই সময় বেশি দরকার। আমি করজোড়ে প্রার্থনা করছি, এই সময় যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। বিশেষজ্ঞদের মতে করোনা সংক্রমণ রোখার জন্য কমপক্ষে ২১ দিন দরকার। সেই জন্যই এই সিদ্ধান্ত।”
WHO বলছে, করোনা ভাইরাস প্রথম ৬৭ দিনে ১ লক্ষ জনকে সংক্রমিত করে। তারপরের ১১ দিনে ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ হয়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা। ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ হতে সময় লাগে ৪ দিন। করোনা ভাইরাস এভাবেই ছড়ায়। এই কারণেই চিন, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইটালি, ইরানের মতো দেশে যখন করোনা ছড়াতে শুরু করে তখন অবস্থা হাতের বাইরে চলে যায়। এই সব দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যাধুনিক। তা সত্ত্বেও করোনার মোকাবিলা করতে পারেনি। তাদের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করেই ঘরবন্দি থাকার কথা বলা হয়েছে। তারা সরকারি নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছিল। এখন ভারতীয়দের পালা। ডাক্তার ও অন্য যারা জীবন বিপন্ন করে কাজ করছে এই সময় তাদের জন্য প্রার্থনা করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
২১ দিনের লকডাইনের পাশাপাশি এদিন স্বাস্থ্যখাতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানান, পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট, ভেন্টিলেটর, বেড, আইলোলেশনের সংখ্যা বাড়ছে। মেডিক্যাল ও প্যারামেডিক্যালের কাজও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।