সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহারাষ্ট্রে আটকে থাকা বাঙালি শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে কাটল না জট। রবিবার দুপুরেই মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস একটি ভিডিও বার্তার টুইট ঘিরে ফের শুরু হয় জল্পনা। মুম্বই থেকে বাংলার শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সাতটি ট্রেনের অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এখনও একটি ট্রেনেরও অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের টুইট করা ভিডিও বার্তায় তিনি লেখেন, “দিদি, দয়া করে দ্রুত পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ছাড়ার অনুমতি দিন। যাতে অভিবাসী শ্রমিকরা পায়ে হেঁটে ফিরতে না হয়।” দেবেন্দ্র ফড়ণবিস বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি পাওয়ার জন্য মহারাষ্ট্র সরকার ও রেল মন্ত্রককেও অনুরোধ করেছেন বলে জানা গেছে। এমনকি এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বলেছেন, “যে রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁরা ফেরত পাঠাতে চাইছেন। তাই প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে যেন প্রধানমন্ত্রী নিজে কথা বলেন। নইলে অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্ভোগ ক্রমেই বাড়ছে।” একদিকে শ্রমিকদের হাতে কোনও কাজ নেই। তার উপরে রাজ্যে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্ত দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে নিতে হচ্ছে। শ্রমিকরাও বাড়ি ফিরতে আগ্রহী। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র ও গুজরাত থেকে বাংলার শ্রমিকরা ফেরার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। কারণ, ওই দুই রাজ্যে সংক্রমণ বেশি হারে ছড়ানোর জন্য তাঁরা বিপন্ন বোধ করছেন।
এই অবস্থায় রেল মন্ত্রক শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করলেও শনিবার রাত থেকে সমস্যার সূত্রপাত। রেল মন্ত্রক টুইট করে জানায়, পশ্চিমবঙ্গের তরফে ‘শ্রমিক ট্রেন’ চেয়ে কোনও আবেদনই আসেনি। আবার রেল মন্ত্রক টুইট করে জানায়, মহারাষ্ট্র থেকে পশ্চিমবঙ্গে কোনও শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন ঢুকতে দিতে রাজি হয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অথচ মহারাষ্ট্র থেকে অন্তত ১৬টি শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন বাংলায় পাঠানো প্রয়োজন। কিন্তু মহারাষ্ট্র থেকে একটি ট্রেনও বাংলায় ঢোকার অনুমতি মেলেনি। তবে শনিবার বিকেলেই নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “কেরল, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক থেকে বাংলার শ্রমিকদের ফেরানো হবে ১০টি ট্রেনে। রবিবার একটি ট্রেন তেলেঙ্গানা থেকে মালদহে পৌঁছবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।” এরপরেই রেল মন্ত্রকের টুইট দেখে অনেকেই ভাবেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব হচ্ছে। আবার অনেকের মতে, মহারাষ্ট্রে সংক্রমণের মাত্রা বেশি হওয়ায় সেখান থেকে শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
তবে রেল মন্ত্রকের টুইটে দেওয়া তথ্যকে সঠিক নয় বলে দাবি করে রাজ্য সরকার। শনিবার রাতে রেল মন্ত্রকের টুইটের পরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে দাবি করা হয়েছে, রেল মন্ত্রকের করা টুইটে যে ক’টি ট্রেনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলির কথা আগের থেকেই রাজ্যগুলিকে জানানো হয়েছিল। ফলে শ্রমিকদের ফেরত পাঠাতে মহারাষ্ট্রের এই ট্রেনের বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত নয়। এদিন দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের বার্তায় আবারও স্পষ্ট হল, মহারাষ্ট্রের শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যাপারে সমস্যা ও বিভ্রান্তি এখনও রয়ে গেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.