সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বলায় এবার মহারাষ্ট্রের বিজেপি মন্ত্রী নীতেশ রানেকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাঁর এহেন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি আরএসএসকেও তোপ দাগলেন তিনি। অভিযোগ করলেন, ধর্মনিরপেক্ষ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রাজ্যে কেরলের বিরুদ্ধে সংঘের ঘৃণ্য মানসিকতা।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পুণেতে এক জনসভায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপি বিধায়ক নীতেশ। তিনি বলেন, ”দক্ষিণের কেরল রাজ্যে আসলে মিনি পাকিস্তান। সেই জন্য রাহুল গান্ধী ও তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওখান থেকে নির্বাচনে জিতে আসেন। সব জঙ্গিরা ওঁদের ভোট দেয়। সব সন্ত্রাসবাদীদের একত্রিত করেই এরা সাংসদ হয়েছে।” তাঁর এহেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই নীতেশের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী শিবির।
অবশেষে মঙ্গলবার এই ইস্যুতে মুখ খুললেন বাম শাসিত কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এক্স হ্যান্ডেলে এই ইস্যুতে তিনি লেখেন, ‘মহারাষ্ট্রের মৎস পালন ও বন্দরমন্ত্রী নীতেশ রানে কেরলকে মিনি পাকিস্তান বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর এই মন্তব্য অত্যন্ত অপমানজন, নিন্দনীয় ও দুর্ভাগ্যজনক। এমন মন্তব্য ধর্মনিরপেক্ষ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গড় হিসেবের পরিচিত কেরলের বিরুদ্ধে সংঘের ঘৃণ্য মানসিকতাকে তুলে ধরে। শুধু তাই নয়, যেখানে বিজেপি সমর্থন পায়নি, সেই জায়গাগুলিকে তারা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ জন্য তারা ঘৃণা ও বিভাজনমূলক প্রচার চালাতেও পিছপা হচ্ছে না। এটাই তাদের কৌশল। কেরলের বিরুদ্ধে এই ঘৃণ্য মন্তব্যের কড়া ভাষায় নিন্দা জানাই। এবং গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে সংঘের বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, নীতেশের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর সোমবারই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন মহারাষ্ট্রের সপা নেতা আবু আজমি। তিনি বলেন, “নীতেশ রানে অত্যন্ত হীন ব্যক্তি। ওনার কাজই হল ঘৃণা ভাষণ দেওয়া। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চাইলে ওনার জন্য এমন একটি মন্ত্রক তৈরি করতে পারেন যার কাজ হবে দেশে ঘৃণা ছড়ানো। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে ঘৃণা ভাষণ ছড়ালে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার। আমাদের সরকার কি নপুংসক হয়ে গিয়েছে? নাহলে কেন এর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয় না?”
এহেন মন্তব্যে বিতর্ক চরম আকার নিলেও নিজের দাবি থেকে সরেননি নীতেশ।সাফাই দিয়ে বলেন, ‘কেরল আমাদের দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু সেখানে হিন্দুদের জনসংখ্যা ক্রমশ কমে যাওয়ার ঘটনা খুবই উদ্বেগের বিষয়। কেরলে বহু হিন্দু, খ্রিস্টান মুসলমান হয়ে যাচ্ছে। লাভ-জিহাদের ঘটনা বাড়ছে। যার ফলেই পাকিস্তানের সঙ্গে পরিস্থিতির তুলনা টেনেছিলাম। আমি যা বলেছি, তা সত্যের উপর ভিত্তি করে।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.