সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ নতুন কিছু নয়। খনিকটা যেন গা সওয়াই হয়ে গিয়েছিল ঘটনাক্রম। যে কোনও জঙ্গি হামলার পরই ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ছিল গতে বাধা। খুব বেশি হলে ‘কড়ি নিন্দা’, বা আন্তর্জাতিক মহলের ‘পাশে দাঁড়ানোর’ আশ্বাস পেয়েই সন্তুষ্ট থাকত দিল্লি। পাকিস্তানও যথারীতি ‘তদন্তের’ আশ্বাস দিত। এতেই কেটে যেত উত্তেজনা। তবে পুলওয়ামা হামলা পালটে দিয়েছে সমীকরণ। ভারতের প্রতিক্রিয়া ওলট-পালট করে দিয়েছে সমস্ত হিসেব। ঘাত-প্রতিঘাতে প্রায় আণবিক যুদ্ধের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল দুই প্রতিবেশী দেশ। এমনই পরিস্থিতিতে নয়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল দেশ। সোমবার, পিনাক গাইডেড রকেটের সফল পরীক্ষা করল প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও।
[তৃণমূলকে ধাক্কা দিতে মোদি-শাহ’ই ভরসা বিজেপির, মার্চেই ব্রিগেডের সম্ভাবনা]
ডিআরডিও জানিয়েছে, সোমবার পোখরানের টেস্ট রেঞ্জে পিনাক রকেটের দুটি সফল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে রকেটটি। প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এই যুদ্ধাস্ত্র। ৪৪ সেকেন্ডে ১২টি রকেট ছুঁড়তে সক্ষম পিনাক সিস্টেম। টাটরা ট্রাকে বসানো থাকে লঞ্চার। প্রতিটি লঞ্চারে রয়েছে ১২টি করে হাই-এক্সপ্লসিভ রকেট। কারগিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাঙ্কার গুঁড়িয়ে দিতে ব্যাপকভাবে এই অস্ত্র ব্যবহার করেছিল সেনা। তবে এবারে রাডার ও নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎক্ষেপণের পর রকেটটিকে নিশানার দিকে গাইড করা সম্ভব। এছাড়াও অস্ত্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করে একটি বিশেষ কম্পিউটার। এর দৌলতে একটি একটি করে বা একবারে সমস্ত রকেট নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে ছোঁড়া যায়। ফলে আরও ঘাতক হয়ে উঠেছে এই যুদ্ধাস্ত্র। এই অস্ত্রটি তৈরি করেছে প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। কাশ্মীর, রাজস্থান ও পাঞ্জাব সীমান্তে মোতায়েন করা রয়েছে এই অস্ত্র। ফলে সহজেই পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গিঘাঁটি বা অন্য টার্গেটে হামলা চালাতে পারে সেনা। এছাড়াও অন্য লেজার গাইডেড বোমা বা মিসাইলের চেয়ে এর উৎপাদন খরচ কম। ফলে অনেক বেশি পরিমাণে এর নির্মাণ সম্ভব।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে পালাবদলের পরই যুদ্ধে ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রাইন’ শুরু করে ভারত। প্রয়োজনে সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে আগেই আক্রমণ শানাবে বলে সাফ জানিযে দেয় সেনা। এক্ষেত্রে পিনাক রকেট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হয়ে উঠবে। শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ি মুহূর্তে গুঁড়িয়ে দেবে এই অস্ত্র। সব মিলিয়ে আপাতত পাকিস্তান ও চিন দু’দিকেই নজর রেখে শক্তিবৃদ্ধি করছে ভারতীয় সেনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.