সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আধার কার্ড ব্যবহার করে খুব সহজেই রিলায়েন্স জিও-র সিম পেয়েছেন? আপনি কিন্তু চরম বিপদে পড়তে পারেন। কারণ, আধার নম্বরের সঙ্গে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে প্যান কার্ডের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি যুক্ত রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা ও ভরতুকিও মেলে আধার নম্বরের জন্যই। কোনওভাবে সেই তথ্য দুষ্কৃতীদের হাতে চলে গেলে আপনি সর্বস্বান্ত হতে পারেন! সম্প্রতি এমন আশঙ্কাই দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ উঠছে, ফ্রি ফোর-জি ইন্টারনেট ডেটা পেতে জিও আধার নম্বর বাধ্যতামূলক করায় সাধারণ মানুষের সমস্ত গোপন তথ্য বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে চলে যাচ্ছে। কারণ, একজনের আধার নম্বরের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য থেকে শুরু করে প্যানকার্ড নম্বর, পরিবারের সদস্য সংখ্যা, সম্পত্তির হিসাব, হাতের আঙুলের ছাপ-সহ সব দরকারি ও গোপন তথ্য বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে চলে যাচ্ছে। একজন আধার নম্বরধারী গ্যাসের সিলিন্ডারের জন্য সরকারের থেকে ভরতুকি পান কিনা, সেই তথ্যও চলে যাচ্ছে।
With JioFi, now every phone is a 4G phone. Enjoy unlimited data, voice calling, Jio apps free until 31st March, 2017. pic.twitter.com/jNhBmwjlZM
— Reliance Jio (@reliancejio) February 1, 2017
সম্প্রতি এই নিয়ে কেরল হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। কেন আধার কার্ডের নম্বর, তথ্য কোনও বেসরকারি সংস্থাকে জানাতে হবে, সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার, ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া(ইউআইডিএআই) ও রিলায়েন্স জিও প্রাইভেট লিমিটেডের বক্তব্য জানতে চেয়েছে আদালত। কেরল প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুনীল টি জি এই মামলাটি দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছে একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্র। প্রসঙ্গত, যে কোনও জিও সিম কার্ড অ্যাক্টিভেট করতে আধার নম্বরের বাধ্যতামূলক।
ন্যাসকম লিডারশিপ ফোরামে গত বুধবার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ অম্বানি জানিয়েছেন, তাঁর সংস্থার নয়া টেলিকম ভেঞ্চার রিলায়েন্স জিও প্রতিদিন অন্তত ১০ লক্ষ করে নতুন গ্রাহক পেয়েছেন আধার কার্ড ব্যবহার করে। এই প্রক্রিয়া যেমন সরল, তেমনই সুরক্ষিতও। ২০১৬-র সেপ্টেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে লঞ্চ হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত জিও-র গ্রাহকসংখ্যা ১০০ মিলিয়ন পেরিয়ে গিয়েছে।
Our Chairman, Mr. Mukesh D. Ambani speaking at the The Nasscom India Leadership Forum: Dialing D for Disruption. #Nasscom_ILF pic.twitter.com/lrx8A5Yfey
— Reliance Jio (@reliancejio) February 15, 2017
আধার আইন অনুযায়ী কোনও ভারতীয় নাগরিকের আধার কার্ডের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ‘পার্মানেন্ট লকিং ম্যানার’-এ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে থাকার কথা। বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন ছাড়া সেই তথ্যের নাগাল কারও পাওয়ার কথা নয়।
এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, জিও-র মতো বেসরকারি সংস্থা কী করে আধার কার্ডের সম্পূর্ণ তথ্য হাতে পাওয়ার সুবিধা পায়? একা জিও নয় অবশ্য, ঠিক একইভাবে ইদানিং এয়ারটেল ও ভোডাফোনও গ্রাহকদের তথ্য যাচাই করে। সংস্থাগুলির দাবি, এই পদ্ধতিতে কোনও অসাধু ব্যক্তি বেআইনি উপায়ে সিম কার্ড তুলতে পারেন না।
মামলাকারীর দাবি, অবিলম্বে ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ও ইউআইডিএআইয়ের চেয়ারম্যান প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে আধার কার্ডের তথ্য সংগ্রহ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিন। এই পদ্ধতি অবিলম্বে বাতিল করারও দাবি উঠেছে।
৬ মাসের সফল পরীক্ষামূলক পরিষেবা প্রদানের পর আগামী ৩১ মার্চ ফ্রি ফোর-জি ডেটার মেয়াদ ফুরোচ্ছে রিলায়েন্স জিও-র৷ তবে ৩১ মার্চের পর আরও তিন মাস আপনি ‘ফ্রি’ হাই স্পিড ফোর-জি ডেটা পাবেন জিও-র কাছ থেকে, দিতে হতে পারে কিছুটা সার্ভিস ট্যাক্স৷ সূত্রের খবর, মুকেশ অম্বানির সংস্থা ৩০ জুন পর্যন্ত প্রায় বিনামূল্যেই ফোর-জি ডেটা দেবে গ্রাহকদের৷ তবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্রি-তে মিললেও, তারপর থেকে প্রতি মাসে সার্ভিস ট্যাক্স-সহ অন্যান্য ট্যাক্সের জন্য মাত্র ১০০ টাকা করে দিতে হতে পারে৷ এমনটাই দাবি সংস্থার ভিতরের একটি সূত্রের৷ যদিও ভয়েস কল সারাজীবনই ফ্রি থাকছে জিও-তে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.