সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অশান্তির আঁচে জ্বলছে রাজধানী দিল্লি। লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আরও কয়েক শো মানুষ। ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে অত্যাচারের শিকার হচ্ছে মানুষ। আবার রেহাইও পাচ্ছেন রাম কিংবা রহিমের দোহাই দিয়েই। সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই ভয়ংকর ছবি দেখে আঁতকে উঠছেন নেটিজেনরা। ঘরের দুয়ার এঁটে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন উত্তর-পূর্ব দিল্লির বাসিন্দারা। তবে কিছু ঘটনা এখনও নতুন ভোরের স্বপ্ন দেথায়। জাতি-ধর্ম ভুলিয়ে বার্তা দেয়, ‘আমরা মানুষ’।
নিজেদের মহল্লায় অশান্তি থামাতে হিন্দু-মুসলিম সকলে গলা মিলিয়ে প্রচার করছেন। আবার সন্ত্রস্ত স্কুল পড়ুয়াদের বাড়ি ফেরাতে রাস্তার ধারে মানববন্ধন গড়েছেন বড়রা। হিংসার পরিবেশের মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে দু’টি ভিডিও। একটি উত্তর-পূর্ব দিল্লি ও অপরটি যমুনা বিহার এলাকার।
প্রথম ভিডিওটিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির একটি কলোনির ছবি উঠে এসেছে। এই কলোনির সমস্ত মানুষ রাস্তায় নেমে স্লোগান দিচ্ছেন। রাত জাগছেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। কলোনির প্রত্যেকটি পরিবার তাঁদের কাছে নিজের আত্মীয়। কে রাম, কে রহিম-কোনও বাছবিছার নেই। সকলকে কাছে টেনে নিয়েছেন তাঁরা। হিন্দু-মুসলিম নির্বিচারে স্লোগান দিচ্ছেন, ‘হিন্দু মুসলিম হাম সব এক হ্যায়’। শপথ নিচ্ছেন, কলোনির পরিবেশ অশান্ত হতে দেব না”। হিন্দু জ্যাঠা আর মুসলিম চাচা হাতে হাত মিলিয়ে ধরে ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছেন।
শুধু উত্তর-পূর্ব দিল্লির ছবি নয়। ভাইরাল হয়েছে যমুনা বিহারের ছবিও। শনিবার রাত থেকে CAA বিরোধী আন্দোলন মাথাচারা দিয়েছে। সেই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার স্কুল থেকে ফেরার পথে বেশকিছু কচিকাঁচা অশান্তির মাঝে পড়ে যায়। আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে রীতিমতো কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। সেইসময় রাস্তায় উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা মানববন্ধন গড়ে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়।
তবে শুধুমাত্র যমুনা বিহার বা উত্তর-পূর্ব দিল্লির নির্দিষ্ট কোনও কলোনি নয়। মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। কেউ-কেউ তো সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলাও করে পোস্ট দিচ্ছেন যে তাঁদের বাড়ির দরজা দুর্গতদের জন্য খোলা। গুরুদ্বারগুলিতে আর্ত মানুষদের অন্ন-বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। অশান্তির দিল্লিতেও এই ধরনের ঘটনা মনে নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। হিংসার ক্ষত সারিয়ে দিল্লির বাসিন্দাদের ঘুরে দাঁড়াতে এরকম মানবিক মুখের যে কতটা প্রয়োজন, তা বলাই বাহুল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.