সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মণিপুরে কিছুতেই নিভছে না হিংসার আগুন। মেতেই জনগোষ্ঠীর দুই পড়ুয়ার অপহরণ এবং নৃশংস খুনের ঘটনায় নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ইম্ফল। রাজধানীতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ছাত্ররা। অভিযোগ, তাদের হটাতে পুলিশ ব্যবহার করছে অতিঘাতক পেলেট গান। যার আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক পড়ুয়া। তাঁর শরীর থেকে বের করা হয়েছে ৬১টি ছররা।
জানা গিয়েছে, বছর একুশের ওই ছাত্রের নাম উত্তম সইবাম। তিনি জাতীয় স্তরের উশু খেলোয়াড়। ইম্ফলে (Imphal) শয়ে শয়ে ছাত্রদের সঙ্গে এক প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেন উত্তম। সেখানেই নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পেলেট গানের আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। রাজধানীরই এক হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, আহত ছাত্রের শরীর থেকে ৬১টি ছররা বের করা হয়েছে। এখনও কয়েকটি বিঁধে রয়েছে তাঁর দেহে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মুখ খুলেছেন উত্তমও। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি অভিযোগ জানান, তারা ইম্ফল ওয়েস্টের সিংজামেই অঞ্চলে প্রতিবাদ দেখাচ্ছিলেন। সেখানে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা ইচ্ছে করে সকলের উপর গুলি চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, মণিপুরে (Manipur) এই প্রথম বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রনে এই অতিঘাতক পেলেট গান ব্যবহার করা হচ্ছে। বলে রাখা ভালো, সাধারণ বন্দুকের মতো দেখতে এই পেলেট গানের গুলি আর পাঁচটা আগ্নেয়াস্ত্রের মতো নয়। এই বন্দুকে ব্যবহার হয় সহস্র ধারালো লোহা বা ফাইবারের বল। বন্দুক চালালেই তীব্র বেগে নিশানার দিকে ছুটে যায় অজস্র ‘পেলেটস’৷ ৫০ থেকে ৬০ মিটারের দূরত্ব পেরিয়ে তীব্র বেগে ছুটে যাওয়া এই ‘পেলেটস’ কারও শরীরে প্রবেশ করলে তা অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে ওঠে। কাশ্মীর উপত্যকায় এই পেলেটস গানের প্রয়োগ শুরু হয় ২০১০ সালে । আধাসেনার দাবি, শেষ অস্ত্র হিসাবেই ব্যবহার করা হয় এই হাতিয়ার। এবার এই অতিঘাতক অস্ত্র ব্যবহার করে বিতর্কে জড়াল মণিপুর পুলিশ।
প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই আফস্পা আইনে প্রায় গোটা মণিপুরকে উপদ্রুত এলাকা বলে ঘোষণা করেছে বিরেন সিংয়ের সরকার। তবে, মেতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ইম্ফলকে ছাড় দেওয়ায় উঠছে প্রশ্ন। কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলে আগামী ছমাসের জন্য বলবৎ থাকবে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’(‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’বা আফস্পা)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.