প্রণব সরকার, আগরতলা: ভোট পরবর্তী হিংসায় দীর্ণ ত্রিপুরায় এবার আক্রান্ত সংসদীয় দল। রাজ্যে বিরোধীদের উপর একের পর এক হামলার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এসে পুলিশি প্রহরায় কার্যত গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএমের যৌথ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। এই হামলার নেপথ্যে রাজ্যের শাসকদল বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ।
কংগ্রেস ও সিপিএমের যৌথ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিপিএমের সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সাংসদ পি আর নটরাজন, এ এ রহিম, কংগ্রেসের সাংসদ রঞ্জিতা রঞ্জন, আবদুল খালেক, সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বাস প্রমুখ। নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাসের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কংগ্রেস-সিপিএমের এই সংসদীয় দল দু’দিনের ত্রিপুরা সফরে আসে। প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি বীরজিৎ সিনহার অভিযোগ, বিশালগড় সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় গেলে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এর ফলে দলটি বিভিন্ন এলাকায় ঢুকতে পারেনি । হামলাকারীরা বিজেপি দলের সমর্থক বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার বাধারঘাট এবং প্রতাপগড় বিধানসভা কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর পরিদর্শন করে বিশালগড়ের উদ্দেশে যায় যৌথ প্রতিনিধি দলটি। বিশালগড় গিয়ে বুধবার শপথ গ্রহণের দিন রাতের বেলা নেহালচন্দ্র নগর এলাকায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ১৯ টি দোকান পরিদর্শন করে সংসদীয় প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে উপস্থিত সাংসদ আবদুল খালেক, প্রাক্তন সংসদ অজয় কুমার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা এবং সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলার সময় শাসকদলের দুর্বৃত্তরা সেখানে পৌঁছয়। সে সময় দুই পক্ষের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা শুরু হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। ভাঙচুর করা হয় সংসদীয় প্রতিনিধি দলের একাধিক গাড়ি। পুলিশ এবং টি এস আর জওয়ানরা সংসদীয় প্রতিনিধি দলকে কোনক্রমে প্রানে বাঁচিয়ে সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে পৌঁছায়।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছিল সে সময় শাসকদলের দুর্বৃত্তরা এসে তাঁদের বাধা দেয়। তিন গাড়ি এসকর্ট থাকার পরেও তাঁরা কোন ভূমিকা নেয়নি। টি এস আর জওয়ানরা জানিয়ে দেন উপর থেকে নির্দেশ না পেলে তারা কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে না। এভাবে প্রশাসনের দিকে আঙুল তুললেন তিনি। কিন্তু এই ঘটনা যে পরিকল্পিত সে তো তিনি এক প্রকার ভাবে স্পষ্ট করে দিলেন। কারণ সর্বভারতীয় নেতৃত্ব প্রত্যেকটি ঘটনা পার্লামেন্টে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে ত্রিপুরার সন্ত্রাসের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.