Advertisement
Advertisement

আত্মহত্যার চেষ্টায় আর শাস্তি নয়

ধ্বনিভোটে লোকসভায় পাস হওয়া এই বিলের সঙ্গে আপনি কি একমত?

Parliament passes bill decriminalising suicide
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:March 29, 2017 6:01 am
  • Updated:December 24, 2019 5:21 pm  

গৌতম ব্রহ্ম: আত্মহত্যা আর পাপ নয়! আত্মহত্যা করার অপরাধে ‘নরকে’ কিংবা জেলেও যেতে হবে না! বরং আত্মহত্যা করার ইচ্ছে একপ্রকার মানসিক ব্যাধি বলেই এবার থেকে গণ্য হবে৷ লোকসভায় পাস হওয়া মানসিক স্বাস্থ্য বিলে শাস্তিযোগ্য অপরাধের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হল নিজেকে শেষ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা বা ইচ্ছাকে৷

অনেকদিন ধরেই এই নিয়ে বিতর্ক চলছিল৷ মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা চিকিৎসক, কাউন্সেলর ও সমাজকর্মীদের প্রায় সবাই একমত হয়েছিলেন, প্রবল হতাশা থেকেই মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়৷ তাই আত্মহত্যাকে মানসিক রোগ বলেই গণ্য করা উচিত৷ জেলে না পাঠিয়ে আত্মহত্যায় উন্মুখ ব্যক্তির উপযুক্ত চিকিৎসা করা উচিত৷ এমনটাই জানালেন ‘ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রি’-র অধিকর্তা ডা. প্রদীপকুমার সাহা৷ প্রদীপবাবু জানালেন, “বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন করে আত্মহত্যা করেন৷ মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়৷ এই রোগকে সামাল দিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে৷”

Advertisement

[তিন তালাক পেয়ে মোদির দ্বারস্থ গর্ভবতী মুসলিম মহিলা]

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী আত্মহত্যা করা বা আত্মহত্যার চেষ্টা করা দু’টোই অপরাধ৷ তাই আত্মহত্যা করে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তির এতদিন আইন মেনে শাস্তি হত৷ নতুন বিলের দৌলতে বিশেষ দু’-একটি ক্ষেত্র ছাড়া শাস্তির খাড়া আর নামবে না আত্মহত্যার প্রচেষ্টা করা ব্যক্তির ঘাড়ে৷ মনোবিদদের প্রায় সবাই তাই এই বিলকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ মেডিক্যাল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান ডা. দিলীপ মণ্ডল জানিয়েছেন, মানসিকভাবে অসুস্থ কোনও ব্যক্তি যদি কোনও ‘কুকর্ম’ করে তাহলে তা আইনের পরিভাষায় অপরাধ বলে গণ্য হয় না৷ তাহলে আত্মহত্যা অপরাধ হবে কেন? এটা মাথায় রাখতে হবে, কোনও সুস্থ মানুষ আত্মহত্যা করতে যান না৷ মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারালেই মানুষ এই চরম পথ বেছে নেয়৷

[মোদিকে হোয়াইট হাউসে নিমন্ত্রণ ট্রাম্পের, বছরশেষে সফর প্রধানমন্ত্রীর]

নতুন বিলে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে৷ বলা হয়েছে, বিপিএল কার্ড না থাকলেও বিনামূল্যে সরকারি হাসপাতাল থেকে মানসিক চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে৷ জাতীয় ও রাজ্যস্তরে মানসিক স্বাস্থ্যপ্রকল্প গ্রহণ করতে হবে৷ মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির ইচ্ছার মর্যাদা দিয়ে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে৷ সম্মতি ছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় কোনওভাবেই ‘অসুস্থ’ ব্যক্তির ছবি বা তাঁর রোগের বিষয় প্রকাশ্যে আনা যাবে না৷ জাতীয় ও রাজ্যস্তরে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলাদা কমিটি গঠন করতে হবে৷

নতুন বিলে আরও একটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ তা হল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়া আর কেউ মানসিক রোগের চিকিৎসা বা কাউন্সেলিং করাতে পারবেন না৷ নিয়ম ভঙ্গ করলে জেল-জরিমানা দু’টোই হবে৷ এই বিষয়টিকেও স্বাগত জানিয়েছেন এ রাজ্যের সাইকিয়াট্রিস্টরা৷ তাঁদের মত, ছ’মাসের কোর্স করে আজকাল অনেকেই কাউন্সেলর হয়ে যাচ্ছেন৷ কাউন্সেলিং করছেন৷ এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ ভুল কাউন্সেলিংয়ের জেরে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷ তাই রেজিস্ট্রেশন নম্বর বাধ্যতামূলক করাটা সব দিক থেকেই জরুরি৷

[সহকর্মীদের ‘টপলেস ভিডিও’ পাঠিয়ে বিপাকে এসপি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement