সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবার উপরে সংসদ, তার উপরে আর কেউ নেই।’ সংসদে পাশ হওয়া আইনে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ নিয়ে ডামাডোলের মাঝেই এবার শীর্ষ আদালতকে নিশানায় নিয়ে সরব হলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘সংসদে পাশ হওয়া আইনের উপর হস্তক্ষেপের অধিকার কারও নেই।’
সম্প্রতি বিধানসভা পাশ হওয়া বিলে সাক্ষরে রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে দেওয়া ও সংসদে পাশ হওয়া ওয়াকফ আইনে সুপ্রিম হস্তক্ষেপ, এই দুই ইস্যুতে বিচার বিভাগকে নিশানায় নিয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। এই ইস্যুতেই মঙ্গলবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে সুর চড়িয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) বলেন, ”১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করা একজন প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত জবাবদিহি করতে হয়েছিল। ফলে এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয় যে সংসদই সর্বোচ্চ। তার উপরে আর কোনও সংস্থা থাকতে পারে না। কারণ সংসদে যারা নির্বাচিত হয়ে আসেন, তাঁরা সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন।” সংসদে গুরুত্ব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেন, “কোন আইন কেমন হবে, তাতে কী কী সংশোধন আনা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার সংসদের রয়েছে। এক্ষেত্রে সংসদের উপরে কেউ নেই।”
সম্প্রতি আইনসভায় পাশ হওয়া বিল নিয়ে ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, আইনসভা থেকে পাশ হয়ে আসা বিল অনন্তকাল আটকে রাখতে পারেন না রাষ্ট্রপতি। তিনমাসের মধ্যে তাঁকে মতামত জানিয়ে দিতে হবে। রাজ্যপালদের জন্যও ওই একই নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্যপালের কাছ থেকে আসা বিলে তিনমাসের মধ্যে মতামত জানিয়ে দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি তিনমাসের মধ্যে তা সম্ভব না হয়, তাহলে দেরি হওয়ার যথাযথ কারণ জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন একদা বাংলার রাজ্যপাল ধনকড়।
কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, “কোন পথে এগোচ্ছে আমাদের দেশ। এ দেশে হচ্ছেটা কী? আমরা গণতন্ত্রের সঙ্গে কোনওদিন আপস করিনি। আজকের দিনটা দেখার জন্য তো এত সংগ্রাম করিনি। এখন দেখা যাচ্ছে, ভারতের রাষ্ট্রপতিকেও একটা বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এটা তো আর সামান্য কিছু নিয়ে মতামত দেওয়া নয়। এখানে বলা হচ্ছে, সময়মতো সিদ্ধান্ত না নিলে বিল আইনে পরিণত হবে।” ধনকড় আরও বলেন, “কীসের ভিত্তিতে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে? বিচারব্যবস্থা সংবিধানের ১৪২ ধারাকে নিউক্লিয়ার মিসাইলের মতো ব্যবহার করছে। এখন যা পরিস্থিতি তাতে বিচারপতিরাই আইন তৈরি করছেন। তাঁরাই নির্দেশ কার্যকর করছেন। এই বিচারপতিরাই সুপার পার্লামেন্ট হিসাবে কাজ করছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.