সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৯৯ সালের জুন মাসে জাঠ রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া ও পাঁচ ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদ করেছিল পাকিস্তানের সেনা। তারপর তাঁদের বিকৃত দেহাংশ ভারতকে ফেরত দিয়েছিল। এই ঘটনার পর ২০ বছর কেটে গেলেও আজও বিচার হয়নি সেই ঘটনার। ফের সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল পাকিস্তান। কাশ্মীরের বাসিন্দা এক ভারতীয় মালবাহকের মুণ্ডচ্ছেদ করে দেহাংশ ফেলে পালাল। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই এর উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতীয় সেনার কিছু জিনিস বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন কয়েকজন মালবাহক। সেসময় তাঁদের লক্ষ্য করে সীমান্তের ওপার থেকে পাকিস্তানের BAT বাহিনীর সদস্যরা গুলি ও গোলা ছুঁড়তে শুরু করে। এই ঘটনায় দুজন মালবাহকের মৃত্যু হয়। তাঁরা হলেন পুঞ্চের গুলপুর সেক্টরের কাসালাইন গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আসলাম (২৮) ও আলতাফ হোসেন (২৩)। জখম হন আরও তিনজন। এরপরই পাকিস্তানি সেনারা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে মৃতদের একজনের মুন্ডু কেটে নিয়ে চলে যায়। পরে জানা যায়, আসলামের মুন্ডু কেটে নিয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের BAT বাহিনীর সদস্যরা। এমনকী তাঁর দেহ ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়।
ঘটনাটির কথা জানাজানি হতেই শনিবার এই বিষয়ে গর্জে ওঠেন ভারতীয় সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে। নিজস্ব কায়দায় ভারতীয় সেনাবাহিনী এই নারকীয় ঘটনার বদলা নেবে বলেও হুমকি দেন। কড়া নিন্দা করে বলেন, ‘পাকিস্তান ছাড়াও অন্য কোনও সেনাবাহিনী মনে হয় এই ধরনের নারকীয় ঘটনা ঘটাতে পারবে না। আমরা সেনার কায়দায় এর উপযুক্ত জবাব দেব।’
এপ্রসঙ্গে কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সেনার তরফে পুলিশের হাতে ওই মালবাহকদের মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ সেগুলি মৃতদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেয়। এরপর শুক্রবার বিকেলে তাঁদের শেষকৃত্যু সম্পন্ন হয়েছে। পাকিস্তানের গোলায় জখম হওয়া মহম্মদ সালেম(২৪), মহম্মদ শওকত (২৮) ও নওয়াজ আহমেদ (৩৫) বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এদিকে এই ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের প্রবল সমালোচনা করে কংগ্রেস। পাকিস্তানের এই বর্বরতার পর তাঁরা কেন চুপ রয়েছেন সেই প্রশ্নও তোলেন। কটাক্ষ করে বলে, কংগ্রেস আমলে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে সরকারের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বিজেপি। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেভাবে ভারতীয় সেনা ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষকে পাকিস্তান খুন করছে। তা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বিজেপির সরকার কবে পাকিস্তানকে এর উপযুক্ত জবাব দেবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ৯ জুন। বন্দি করার ২৬ দিন পর জাঠ রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন সৌরভ কালিয়া এবং পাঁচ ভারতীয় সেনার দেহ ফিরিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। দেহ বলতে খানিকটা মাংসপিণ্ড আর ভাঙা হাড়। খুবলে তুলে নেওয়া হয়েছিল দু’টো চোখ। কেটে নেওয়া হয়েছিল নাক ও ঠোঁট। ভাঙা মাথার খুলি। সারা দেহে সিগারেটের ছেঁকা। হাত-পা এমনকী যৌনাঙ্গ পর্যন্ত টুকরো টুকরো করে কাটা ছিল সৌরভের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.