সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজেপি (BJP) সরকারের বিতর্কিত অধ্যায়ের মধ্যে অন্যতম সিএএ (CAA) বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। এই আইন প্রণয়নের যুক্তি ছিল, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির ধর্মীয় সংখ্যালঘু যেসব মানুষ ভারতের নাগরিকত্ব চান, তাঁদের দ্রুত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে। পাকিস্তানের হিন্দু বাসিন্দারা চেয়েও ভারতের নাগরিকত্ব পাননি, এমনটাই জানা গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত সিএএ কার্যকর হয়নি।
সীমান্ত লোক সংগঠন নামে একটি আইনি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৮০০ জন পাকিস্তানি হিন্দু (Pakistani Hindu) ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু অনেক দিন অপেক্ষা করার পরেও তাঁদের আবেদন সংক্রান্ত কোনও কাজই হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা পাকিস্তানেই ফিরে গিয়েছেন। জানা গিয়েছে, এই আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকেই রাজস্থানে থাকতেন। সিএএ অনুযায়ী, প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে এসে পাঁচ বছর থাকলেই তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব (Indian Citizenship) দেওয়া হবে। আগে পাঁচ বছরের বদলে এগারো বছর ভারতে থাকতে হত। কিন্তু পাকিস্তানি হিন্দুদের অনেকেই সেই সময়সীমার চেয়ে বেশি দিন ধরে বাস করেও নাগরিকত্ব পাননি বলে জানা গিয়েছে।
সীমান্ত লোক সংগঠন বা এসএলএসের প্রেসিডেন্ট হিন্দু সিং সোধা জানিয়েছেন, “যাঁরা ফিরে গিয়েছেন, তাঁদের দিয়ে ভারতের বদনাম করিয়েছে পাকিস্তান। মিডিয়ার সামনে এসে তাঁদের বলতে বাধ্য করা হয়েছে যে ভারতে তাঁদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে ২০১৮ সালে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেখানে অনলাইনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যেত। কিন্তু সেখানে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি পাসপোর্ট গ্রহণ করা হয়নি। সেই পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য দিল্লিতে পাক হাই কমিশনে মোটা টাকার বিনিময়ে কাজ করা হয়েছে, এমনটাও জানিয়েছেন সোধা। অনলাইনে আবেদন করা হলেও কাগজ জমা দিতে যেতে হত কালেক্টর অফিসে, তাই সমস্যায় পড়েছেন পাকিস্তানিরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, ২০২১ সাল পর্যন্ত দশ হাজারেরও বেশি নাগরিকত্বের আবেদন জমে রয়েছে। তার মধ্যে ৭৫ শতাংশই এসেছে পাকিস্তানিদের থেকে। এপ্রিল মাসে মোদি সরকার জানিয়েছে, আরও ছয় মাস সময় লাগবে সিএএ সংক্রান্ত আইন পর্যালোচনা করতে। তাই এই আইন নিয়ে ধোঁয়াশা কাটবে কবে, তা এখনও অজানা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.