Advertisement
Advertisement

পরমাণু-অস্ত্র নিয়ে ভারতে হামলার জন্য তৈরি পাকিস্তান, হুমকি সঈদের

হাফিজের এই হুমকির ফলে কূটনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলছে যে, তা হলে কি শেষ পর্যন্ত জঙ্গিদের হাতে চলে গিয়েছে পরমাণু অস্ত্র?

Pakistan ready to attack India with nuke-powered drones: JuD chief Hafiz Saeed
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 7, 2016 10:36 am
  • Updated:June 7, 2016 10:36 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েক আগেই পাকিস্তানের বিতর্কিত পরমাণু বিজ্ঞানী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে দিল্লিকে ছাই করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে পাকিস্তান৷ সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ফের ভারতে পরমাণু হামলার হুমকি মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সঈদের৷ আর এই হুমকি যখন এল, সে সময়েই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিদেশ বিষয়ক পরামর্শদাতা সরতাজ আজিজ স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন যে, নয়াদিল্লির সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালাতে ইসলামাবাদ মোটেও ‘ভীষণভাবে উদগ্রীব’ নয়৷ সেই কারণে হাফিজের এই হুমকি-বার্তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে৷ যদিও কাদিরের মতোই হাফিজের হুমকিকেও একেবারে গুরুত্ব দিতে নারাজ নয়াদিল্লি৷ যদিও হাফিজের এই মন্তব্যের পর গোটা দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে৷
হাফিজের এই মন্তব্যের জেরেই পাকিস্তানের পরমাণু ভাণ্ডারের নিরাপত্তা নিয়েই ফের একবার প্রশ্ন উঠে গেল৷ ভারত ও আমেরিকা বারবার পাকিস্তানের পরমাণু ভাণ্ডারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে৷ কিন্তু পাকিস্তান প্রতিবারই সেই দাবি একেবারে খারিজ করে দিয়েছে৷ দু’ দেশই রীতিমতো আশঙ্কার সুরে জানিয়েছিল যে, ভবিষ্যতে হয়তো পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ কার্যত জঙ্গিদের হাতেই চলে যেতে পারে৷ আর এবার হাফিজের এই হুমকির ফলে কূটনৈতিক মহল প্রশ্ন তুলছে যে, তা হলে কি শেষ পর্যন্ত জঙ্গিদের হাতে চলে গিয়েছে পরমাণু অস্ত্র? আর কূটনৈতিক মহলের ধারণা যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তাহলে তা বিশ্বের পক্ষেই ক্ষতিকর৷ এমনটা হলে ভবিষ্যতে আইএসের হাতেও চলে যেতে পারে পরমাণু অস্ত্র৷ কারণ, কিছুদিন আগেই আইএস দাবি করেছিল যে, পরমাণু অস্ত্র পেতে আর অল্প সময়ের অপেক্ষা৷
কিছুদিন আগেই মুম্বই হামলার মূল চক্রী তথা জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সঈদের গতিবিধি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে৷ ওই রিপোর্টের বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছে৷ সঈদ সাম্প্রতিককালে ভারত-পাক সীমান্ত অঞ্চলের প্রচুর জঙ্গি ঘাঁটিতে গিয়েছেন৷ সেখানকার জঙ্গিদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠকও করেছেন৷ প্রসঙ্গত, ভারত সীমান্তে লেজার ওয়াল দেওয়ার পর থেকেই অনুপ্রবেশ কঠিন হয়ে গিয়েছে৷ সেই কারণে নতুন করে জঙ্গি নিয়োগ থেকে জঙ্গি-প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন স্বয়ং হাফিজ৷ এমনকী, দিনকয়েক ধরেই সীমান্তবর্তী প্রায় ১০টি গ্রামে ভাষণ দিয়েছেন হাফিজ৷ আর সেখানেই বারবার ভারতে পরমাণু অস্ত্রের হুমকি দিয়েছেন৷
সেরকম একটি ভাষণে মুম্বই হামলার মূল চক্রী বলেছেন, “ভারতীয় সেনা ছাউনি থেকে যদি একটি ড্রোন হামলাও হয়, তা হলে আমাদের কাছেও ভারতে হামলা চালানোর জন্য রয়েছে পরমাণু অস্ত্র৷” গোপন সূত্রে জানা গিয়েছে যে, এ বছরের প্রথমদিকে সঈদের পরামর্শ মেনেই ভারত বিরোধী সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর জন্য প্রচুর জঙ্গি নিয়োগ করেছে পাক-গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং পাক-সেনা৷ এমনকী, ওই জঙ্গিদের প্রশিক্ষণেও প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে নওয়াজ শরিফ প্রশাসন৷ ২০০৮ সালে রাষ্ট্রসংঘ সঈদকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করেছে৷ তার জঙ্গি সংগঠনকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ তবুও পাকিস্তানে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন হাফিজ৷ পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে কোনও মদত দেবে না বলে ঘোষণা করা সত্ত্বেও হাফিজের বিরু‌দ্ধে কোনও পদক্ষেপ করছে না পাক দেশ৷ পাকিস্তানের এই দ্বিচারিতার সমালোচনা করেছে গোটা বিশ্বই৷ এমনকী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সন্ত্রাস বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন৷
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিক্কর ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে, পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার পথ আস্তে হলেও এগোচ্ছে৷ এমনকী, ইসলামাবাদের সঙ্গে সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে যে নয়াদিল্লি সব সময় পা এগিয়ে রেখেছে, তার নজির এর মধ্যেই দিয়েছে তারা৷ পারিক্করের সেই দাবিকে একবারে উড়িয়ে দিয়ে সরতাজ আজিজ জানিয়েছেন যে, নয়াদিল্লির সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য কোনওভাবেই উদগ্রীব নয় ইসলামাবাদ৷ কারণ প্রতিবার শেষ মুহূর্তে ভারত পিছিয়ে এসেছে৷ যদিও আজিজের মন্তব্যের বিষয়ে নয়াদিল্লির তরফে কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement