সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) জঙ্গিনেতা ইয়াসিন মালিককে (Yasin Malik) যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছে আদালত। এই সিদ্ধান্ত একেবারেই নাপসন্দ পাকিস্তানের (Pakistan)। ইতিমধ্যেই এই রায়ের তীব্র নিন্দা করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও অন্যান্য পাক নেতারা। এমনকী, রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনকে চিঠিও লিখেছে পাকিস্তান। দাবি, ইয়াসিনের মামলাটি ‘সাজানো’।
পাক প্রধানমন্ত্রী ইয়াসিনের সাজাপ্রাপ্তির পরই টুইটারে লেখেন দিনটি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য ‘ব্ল্যাক ডে’। পাশাপাশি মালিককে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’ বলেও দাবি করেন তিনি। একই কথা বলেছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো। ওই বিচারকে ‘সাজানো’ বলে ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি এটা কাশ্মীরের কণ্ঠস্বরকে চেপে দেওয়ার পদক্ষেপ বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্যও করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বরাবরই কাশ্মীর বিষয়ে নানা মন্তব্য করেছে পাকিস্তান। ২০১৯ সালে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করা হলেও রাষ্ট্রসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ইসলামাবাদ। ভারত অবশ্য বারবার জানিয়ে দিয়েছে, এটা একান্তই দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। পাশাপাশি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া ও উপত্যকা অঞ্চলে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ জানিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি।
এদিকে গুপকার জোটের তরফে ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবনের সাজাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছে। জোটের মুখপাত্র এম ওয়াই তারিগামি এক বিবৃতিতে দাবি করেন, আদালতের এই রায় কেবলই উপত্যকার মানুষের মনে বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতাকে উসকে দেবে।
বুধবারই দিল্লিতে এনআইএ-র বিশেষ আদালত যাবজ্জীবনের সাজা দিয়েছে ইয়াসিন মালিককে। পাশাপাশি, বুধবার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টে’র (JKLF) প্রধানকে জঙ্গিদের অর্থসাহায্যের অপরাধে ১০ লক্ষ টাকার জরিমানাও করা হয়েছে। গত ১৯ মে মালিককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালতে নিজেই জঙ্গিদের মদত দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেয় ইয়াসিন মালিক। সেই বয়ানের ভিত্তিতেই বিচ্ছিন্নতাবাদী এই নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। জানা গিয়েছে, জেলে তাকে আলাদা সেলেই রাখা হবে। কোনও ভাবেই তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হবে না। এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে তাকে জেলে কোনও কাজও করতে হবে না।
বহুদিন ধরেই জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্ম চালানোর ও তা প্রচার করার অভিযোগ রয়েছে জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের নেতা ইয়াসিন মালিকের (Yasin Malik) বিরুদ্ধে। এই কারণে একাধিকবার গৃহবন্দিও করে রাখা হয় তাকে। বছর দুয়ের আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগে। প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর উপত্যকায় জোর ধরপাকড় শুরু করে ভারতীয় সেনা। তখনই ইয়াসিন মালিক-সহ বেশ কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার জঙ্গিযোগের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.