সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবছরের পদ্ম সম্মান প্রাপকদের তালিকায় রয়েছে ১১৯ জনের নাম। তালিকায় রয়েছেন কঙ্গনা রানাউত, একতা কাপুর, আদনান সামি, করণ জোহরের মতো তারকারা। কিন্তু তবুও এই তালিকায় আলাদা করে নজর কেড়েছেন কর্ণাটকের এক সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা। খালি পায়ে ‘ট্র্যাডিশনাল’ পোশাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উদ্দেশে তাঁর করজোড়ে নমস্কার করার দৃশ্যই যেন হয়ে রইল অনুষ্ঠানের সেরা মুহূর্ত। ‘বনের বিশ্বকোষ’ নামে পরিচিত তুলসি গৌড়া পেয়েছেন পদ্মশ্রী (Padma Shri)। তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার মুহূর্ত শেয়ার করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও।
আসলে তুলসির এই সম্মানপ্রাপ্তি সেই ভারতবর্ষের কথা বলে, যাকে ঢেকে রেখেছে নাগরিক সভ্যতার ঝলমলে অস্তিত্ব। যে ভারতবর্ষ শাশ্বত ভারতবর্ষ। এ দেশের চিরকালীন রূপরেখা সেই ভারতবর্ষের হৃদয়ে। যার প্রতিনিধি হয়ে প্রচারের কৃত্রিম আলোকবৃত্ত থেকে বহু দূরে অরণ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় যে কীর্তি গড়েছেন তুলসি তা সত্য়িই অবিস্মরণীয়। হাল্কাকি উপজাতির ৭৭ বছরের বৃদ্ধা গত ৬ দশক ধরে সবুজায়নকেই ‘পাখির চোখ’ করে রেখেছেন। এই দীর্ঘ সময়কালে ৩০ হাজার চারা পুঁতেছেন তিনি। তারপর সেই চারাগুলিকে মহীরুহতে পরিণত করেছেন পরম স্নেহ ও ভালবাসায়। অরণ্য দপ্তরের হয়ে নার্সারির কাজে মগ্ন থেকেছেন। আর হয়ে উঠেছেন গাছগাছালি সম্পর্কে অনন্ত জ্ঞানের এক ভাণ্ডারস্বরূপ!
View this post on Instagram
‘দাও ফিরে সে অরণ্য’ বলে আহ্বান করলেই তো হয় না। যেভাবে নাগাড়ে সবুজকে ধ্বংস করে চলেছে মানুষ, তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে লড়াই কখনওই সহজ নয়। আর সেই কঠিন লড়াইকেই অনায়াসে করতে পেরেছেন যে মানুষরা তাঁদেরই শীর্ষস্থানীয় তুলসি। মাত্র ২ বছর বয়সে হারিয়েছিলেন বাবাকে। দরিদ্র পরিবারে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাই খুব অল্প বয়সেই ঢুকে পড়া কাজে। ১২ বছর বয়সে তুলসি অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন অরণ্য দপ্তরে। পরে ক্রমশই নিজের কাজে মন জিতে নেন সকলের। পেয়ে যান স্থায়ী চাকরি।
কখনও স্কুলে যাননি তিনি। কিন্তু অরণ্যের বুক থেকে পেয়েছেন এমন এক শিক্ষা যা শহুরে ডিগ্রিধারীদের অধরাই থেকে যায়। খোদ প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে লিখেছেন, ”একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে উঠে এসে যাঁরা পদ্মসম্মান পেয়েছেন তাঁদের জন্য গর্বিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.