Advertisement
Advertisement

বন্যায় বিপর্যস্ত দেশের ৭টি রাজ্য, উত্তরোত্তর বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

একাধিক রাজ্যে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট।

Over fifty killed as nine states face flood fury in India
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:August 10, 2019 4:04 pm
  • Updated:August 10, 2019 4:04 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসম ও বিহারের বন্যা পরিস্থিতি এখন ক্রমশ স্বাভাবিক হওয়ার পথে। কিন্তু গোটা দক্ষিণ ভারত ও মধ্য ভারতের কিছু অংশ এখন বন্যায় প্রায় বিধ্বস্ত। প্রায় সাতটি রাজ্যের অধিকাংশ জায়গা এখন জলের তলায়। এর মধ্যে কেরল, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্রের অবস্থা বেশ বিপজ্জনক। গুজরাট, গোয়া ও ওড়িশার অবস্থাও প্রায় তথৈবচ। এখনও পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুসারে সাতটি রাজ্য থেকে প্রায় শতাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

গত তিনদিনে কেরলে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৫ জনের। ভারতের সব রাজ্যগুলির মধ্যে বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে কেরলের। জল জমার ফলে দক্ষিণ রেলের তরফে প্রায় ২০টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছ। ওয়ানড় ও মালাপুরমে ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকার লোকেদের উদ্ধার করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ৭৩৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ত্রাণ কাজের জন্য ভারতীয় বায়ুসেনা ও নৌসেনার জওয়ানরাও নেমে পড়েছেন। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে প্রায় ৪০টি বাড়ি। একাধিক জায়গায় নেমেছে ধস। রাজ্যের এমন পরিস্থিতির মধ্যেও আবহাওয়া দপ্তর সেখানে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। ফলে রাজ্যজুড়ে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: গুজরাটে বহুতল ভেঙে মৃত ৪, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে রয়েছেন বহু ]

ndrf

কেরলের তুলনায় কর্ণাটকে অবশ্য বন্যার ফলে মৃতের সংখ্যা কম। এখনও পর্যন্ত রাজ্য থেকে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। রাজ্যের বগলকোট, বিজয়াপুরা, রায়চূড়, ইয়াদগিরি, উত্তর কান্নাড়া, দক্ষিণ কান্নাড়া, শিবানুগ্গা, কোদাগু ও চিক্কামোগলুরের বানভাসী অবস্থা। রাজ্যের গাদাগ জেলার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। এই জেলার কাছাকাছি সমুদ্র সৈকত থাকায় সমস্যাটা এখানকার মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগ করছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর প্রায় ২ লাখ ৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে স্থানান্তরিত করেছে। প্রায় ১১ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর উপর আবার রয়েছে ডেঙ্গুর আতঙ্ক। প্রায় ৬৫০টি গ্রামে ইতিমধ্যেই থাবা বসিয়েছে এই রোগ। বন্যার পাশাপাশি ডেঙ্গুর কারণেও আতঙ্কিত কর্ণাটকবাসী।

বন্যার কারণে মহারাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। বন্যা কবলিত পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পাঁচটি জেলা। এর মধ্যে কোলাপুর ও সাংগিলে গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত চলছে। শিরডির কাছে ধস নামার ফলে বৃষ্টির কারণে মুম্বই-বেঙ্গালুরু জাতীয় সড়কের যান চলাচল বন্ধ। হাইওয়েতে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রায় ১৮ হাজার গাড়ি। প্রায় ১ লাখ ৩৪ হাজার জনকে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এখনও বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে প্রায় ৩৪টি উদ্ধারকারী দল। ওড়িশাতেও প্রায় ১.৩ লক্ষ মানুষ ঘরছাড়া। তিন জেলা এখন বন্যার জলে ভাসছে। প্রায় ১৪ হাজার মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

[ আরও পড়ুন: নয়া সভাপতি বাছতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক, দৌড়ে এগিয়ে মারাঠা নেতা ]

পানীয় জলের অভাবে কিছুদিন আগেই ধুঁকছিল তামিলনাড়ু। কিন্তু এবার বন্যায় বিপর্যস্ত রাজ্য। তবে কেরল, কর্ণাটক বা মহারাষ্ট্রে থেকে এখানে মৃতের সংখ্যা অনেক কম। এখনও পর্যন্ত রাজ্য থেকে চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এঁদের মধ্যে প্রত্যেকেই মহিলা। রাজ্যের মানুষকে উদ্ধার করতে প্রায় ৪৯১ জন উদ্ধারকারীকে পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ৩৬টি মেডিক্যাল টিম ও ৩০টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের অবস্থাও খানিকটা তামিলনাড়ুর মতোই। ১২ জন মহিলা-সহ প্রায় ৩১ জন মৎসজীবী আটকে ছিলেন গোদাবরী নদীতে। সম্প্রতি তাঁদের উদ্ধার করেছে নৌসেনা। গুজরাটে ভেঙে পড়েছে একটি বহুতল। নর্মদার সর্দার সরোবর বাঁধের ২৬ থেকে ৩০টি লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে একাধিক এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা। গোয়ায় অবশ্য বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। প্রায় দেড়শোটি পরিবারকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় এখনও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সদস্যরা। উদ্ধারকাজ চলছে মধ্যপ্রদেশেও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement