ছবি: প্রতীকী।
নয়াদিল্লি ও আমেদাবাদ: জোরদার ধাক্কা খেল নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের উন্নয়নের ‘গুজরাট মডেল’ (Gujarat Model)। কারণ, জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র সূচক (MPI) রিপোর্ট অনুসারে, গুজরাটকে এখনও অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়েই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। চলতি বছরের জুলাইয়ে নীতি আয়োগে রিপোর্টেই স্পষ্ট, রাজ্যের জনসংখ্যার ৩৮.০৯ শতাংশ অপুষ্টির শিকার।
গুজরাটের গ্রামীণ জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ৪৪.৪৫ শতাংশ পুষ্টি থেকে বঞ্চিত, যেখানে শহরাঞ্চলে এই হার ২৮.৯৭ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবেই এই তথ্য সামনে আসতেই মোদি-শাহদের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস। এক্স-এ (পূর্বতন টুইটার) একটি পোস্টে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ লেখেন, ‘দেশকে প্রায়শই জি টু (মোদি ও শাহ) গুজরাট মডেলে উন্নয়নের কথা মনে করিয়ে দেন। কিন্তু নীতি আয়োগের সাম্প্রতিক রিপোর্টে কী বলা হয়েছে, তা দেশের কাছে লুকিয়ে যাওয়া হয়। রাজ্যের ৩৮ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভোগেন, গ্রামীণ গুজরাটের প্রায় অর্ধেক মানুষ পুষ্টিকর খাদ্য থেকে বঞ্চিত।
অবহেলিত শিশুদের নিরিখে ভারতে চতুর্থ স্থানে রয়েছে গুজরাট। কম ওজনের শিশুদের মধ্যে ভারতে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাজ্যের মধ্যে তারা দু’নম্বরে। গ্রামীণ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি (গুজরাটে) আবাসন থেকে বঞ্চিত।’ আগামী দিনেও বিরোধীরা যে এই ইস্যু নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়াবে, কংগ্রেসের এদিনের অবস্থান থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। নীতি আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী, অপুষ্টির ক্ষেত্রে গুজরাটের থেকে তুলনামূলক ভাল ফল করেছে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং উত্তরপ্রদেশের মতো পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলি। বয়স অনুপাতে কম ওজন গুজরাটের ৩৯ শতাংশ শিশুর।
আমেদাবাদের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের অধ্যাপক আত্মন শাহ এ বিষয়ে বলেন, “অপুষ্টি উদ্বেগের একটি গুরুতর কারণ। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩৩.৬ শতাংশ পরিবার এবং গুজরাটের ৪১.৩৭ শতাংশ পরিবারে অন্তত একজন অপুষ্টির শিকার ছিল। ২০২১ সালের মধ্যে এই সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গে নেমে এসেছে ২৭.৩ শতাংশে। কিন্তু গুজরাটে তা এখনও অনেকটা বেশি, ৩৮.৯ শতাংশ।” নীতি আয়োগের মতে, গুজরাটে জনসংখ্যার ২৩.৩০ শতাংশ আবাসন থেকে বঞ্চিত। কেরল, পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ু গুজরাটের চেয়ে ভাল ফল করেছে। গ্রামীণ এলাকায় পরিস্থিতি আরও খারাপ। কারণ গ্রামীণ জনসংখ্যার ৩৫.৫২ শতাংশ আবাসন থেকে বঞ্চিত, যা হরিয়ানা, পঞ্জাব, কেরল এবং তামিলনাড়ুর মতো অন্যান্য প্রধান রাজ্যগুলির তুলনায় বেশি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.