স্টাফ রিপোর্টার: ধ্যান-যোগ বন্ধ করে হোটেল-রিসর্ট বানানোর ফন্দি। আর তাই পরিকল্পনা করে ৩২ একরের আশ্রম বিক্রির চক্রান্ত করছে পুণের ওশো আশ্রমের ট্রাস্টি বোর্ডের একাংশ। বিহিত চেয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi) চিঠি লিখলেন রজনীশ ওশোর শিষ্যরা। সারা পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে রজনীশ ওশোর আশ্রম। যার মধ্যে সর্ববৃহৎ পুণের কোরেগাঁও পার্কের আশ্রমটি।
জন্মের সময় রজনীশ ওশোর নাম ছিল চন্দ্রমোহন জৈন। প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে অন্য রকম এক ধর্মীয় মতাদর্শের প্রচার শুরু করেছিলেন তিনি। মেডিটেশন বা ধ্যান-ই যার মূল কথা। ১৯৯০ সালে মারা যান ওশো। তার আগে ১৯৭৪-এ পুণের কোরেগাঁও পার্কে ৬ একর জমি কিনে নিজের আশ্রমের কাজ শুরু করেছিলেন। পরে তা আয়তনে বৃদ্ধি পায়। অগুনতি সেলিব্রিটি আসতেন এ আশ্রমে। সে তালিকায় ছিলেন বিনোদ খান্নার মতো তারকা।
প্রেসক্লাবে এদিন ওশো-র সমর্থকরা অভিযোগ করেন, দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে ট্রাস্টি বোর্ডের একাংশের মধ্যে। স্বামী চৈতন্য কীর্তির অভিযোগ, পুণে আশ্রমের ট্রাস্টি বোর্ড আর সুইজারল্যান্ড জুরিখ ওশো ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ড যোগসাজশ করেছে। তারা ৩২ একর জমি বেচে দিতে উদ্যোগী। আশ্রমের প্লট নম্বর ১৫ আর ১৬ ইতিমধ্যেই ১০৭ কোটি টাকায় বেচার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।
স্বামী চৈতন্য কীর্তির দাবি, ‘‘ওশো-কে নিয়ে এঁদের মধ্যে কোনও আবেগ নেই। শুধুমাত্র টাকা রোজগারের ফিকিরে এঁরা রজনীশ ওশোকে ব্যবহার করছেন। যে কারণে পুণের ওই আশ্রম এখন হোটেল রিসর্টের মতো ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।’’ অভিযোগ, আশ্রমে ওশোর সমাধি থাকলেও বেচার জন্য তাকে ওশোর বেডরুম বলা হয়। যাতে বিক্রি করতে সুবিধা হয় সেকারণেই এই ফন্দি ফিকির।
অভিযোগের তির যাঁদের দিকে তাঁরা জুরিখে ওশো ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের দায়িত্বে থাকা মাইকেল ও বায়ার্ন জন অ্যান্ড্রু। এক শিল্পপতির বাড়ির সঙ্গে ওশো আশ্রমের দেওয়াল একই। অনেকেই বলছেন, সেই দেওয়াল ভেঙে পুরো জমিটাই শিল্পপতিকে বেচে দেওয়ার মতলব করা হয়েছে। প্রতিবাদে কলকাতা-সহ সারা পৃথিবী থেকে ২১ মার্চ শিষ্য-শিষ্যারা যাচ্ছেন পুণের কোরেগাঁও পার্কে। সেখানে ওশো আশ্রম বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু হবে। রজনীশ ওশোর মালা পরেন তাঁর শিষ্য-শিষ্যারা। অভিযোগ, আশ্রমে এখন এই মালা পরেও ঢুকতে দেওয়া হয় না। অভিযোগ, আগে দীক্ষা দেওয়া হত। এখন দীক্ষা দেওয়ার কাজও সম্পূর্ণ বন্ধ আশ্রমে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.