সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কোনও মতেই আর যমুনা নদীতে দেওয়া যাবে না মূর্তি বিসর্জন৷ দূষণ রোধে দুর্গাপুজোর মরশুমে এই কঠোর নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছিল দিল্লির পুজো কমিটিগুলির কাছে৷ যা দেখে মাথায় হাত পড়ে যায় উদ্যোক্তাদের৷ কীভাবে হবে প্রতিমা বিসর্জন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে এক অভিনব উপায় বের করে ফেললেন দিল্লির বিখ্যাত চিত্তরঞ্জন পার্কের মেলা গ্রাউন্ড দুর্গাপুজো সমিতির আয়োজকরা৷ নিজেদের মন্দির প্রাঙ্গণেই একটি ছোট পুকুর কেটে ফেললেন তাঁরা৷ তাতে পরিস্রুত জল ভরে, সেখানে মা দুর্গার বিসর্জনের ব্যবস্থা করলেন৷
[ আরও পড়ুন: ছেলের বউকে লাগাতার ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ব্যক্তির ]
জানা গিয়েছে, দিল্লিতে বসবাসকারী বাঙালিদের এই ঐতিহ্যশালী পুজো কমিটির তরফে এবার চিত্তরঞ্জন পার্কের মাঠে একটি ৪০ ফুট লম্বা ও ২৬ ফুট চওড়া পুকুর কাটা হয়৷ যার গভীরতা প্রায় সাড়ে পাঁচ ফুট৷ সাতটি ট্যাংকের সাহায্যে তাতে ঢালা হয় কয়েক হাজার লিটার পরিস্রুত জল৷ এবং এবার সেখানেই দুর্গা প্রতিমার নিরঞ্জন করেন ক্লাব কমিটির সদস্যরা৷ কমিটির সচিব জয়দীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যমুনা দূষণের জন্য সরকারি নির্দেশে এবার নদীতে বিসর্জন বন্ধ৷ যা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তায় ছিলাম৷ আমাদের ঠাকুরের উচ্চতা বেশি হওয়ায় চিন্তা আরও বেশি ছিল৷ অবশেষে আমরা ঠিক করি, এই মাঠেই পুকুর কেটে, সেখানে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে৷ এতদিন আমার দুপুর বেলা ঠাকুর নিয়ে শোভাযাত্রায় বেরিয়ে যেতাম৷ এবং নদীতে বিসর্জন দিতাম৷ এই প্রথমবার আমরা, শোভাযাত্রা করে নিজেদের মাঠেই ফিরব৷ এবং এখানেই প্রতিমাকে বিসর্জন দেব৷’’ তিনি আরও জানান, সরকারের তরফে যে নির্দেশাবলী এসেছিল, তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছিল, প্রতিমার উচ্চতা পাঁচ ফুটের মধ্যে রাখতে হবে৷ তবেই সরকারি স্থলে প্রতিমা নিরঞ্জন করা যাবে৷ তবে চিত্তরঞ্জন পার্কের প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ১৮ ফুটের মতো৷ সেজন্যই নিজেদের উদ্যোগে পুজো প্রাঙ্গণেই প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করেন তাঁরা৷
[ আরও পড়ুন: ‘গণপিটুনি বিদেশ থেকে আমদানি হয়েছে’, বিজয়াদশমীর অনুষ্ঠানে বললেন মোহন ভাগবত ]
পরিবেশ রক্ষার্থে এই অভিনব পদক্ষেপ নিলেও, চোখের সামনে একটু একটু করে মাতৃ মূর্তিকে গলতে দেখা যে বিষাদের, তা এক কথায় স্বীকার করে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা৷ তাঁদের কথায়, ‘‘মাতৃ প্রতিমাকে চোখের সামনে গলতে দেখা অবশ্যই দুঃখের৷ তবে যমুনা দূষণ রুখতে এই নির্দেশ মানতে হবে৷ আমাদের অনুমান সাত থেকে দশ দিনের প্রতিমা গলে যাবে৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.