সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে মহাজোট গঠনের ফরমুলা প্রায় চূড়ান্ত। অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি, অজিত সিংয়ের রাষ্ট্রীয় লোক দল এবং কংগ্রেস জোট বেঁধে লোকসভার ৮০টি আসনে লড়বে বলে ঠিক করেছে। সূত্রের খবর, বিএসপি ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে যে বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে, তাতে ঠিক হয়েছে, সমাজবাদী পার্টির কোটা থেকেই তিনটি আসন ছাড়া হবে অজিত সিংকে। কংগ্রেসকে ছাড়া হচ্ছে আটটি সিট। সবচেয়ে বেশি ৪০টি আসনে লড়বে মায়াবতীর দল। কোটার তিনটি আসন অজিত সিংকে ছাড়লে অখিলেশ যাদবের দল লড়বে আনুমানিক ২৯টি আসনে। কংগ্রেসের এক নেতা অবশ্য বলেন, “দশের বেশি আসনের কমে আমরা রাজি হব না।”
গতবার এই রাজ্য থেকে ৭৩টি আসনে জিতেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এবার এই উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ—মায়াবতী—অজিত সিং ও কংগ্রেস জোট বাঁধলে বড়সড় ধাক্কা খাবে বিজেপি। সম্প্রতি গোরক্ষপুর, ফুলপুর, কৈরানা লোকসভা আসনে উপনির্বাচনে দেখা গিয়েছে, বিরোধীরা জোট গড়লে বিজেপি আর তাদের আসন ধরে রাখতে পারছে না। দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদিকে ধাক্কা দিতে গেলে উত্তরপ্রদেশে জোট গঠনের প্রক্রিয়া সবার আগে সারা দরকার বলে একমত বিরোধীরা। সেই কারণেই উত্তরপ্রদেশের বিরোধী জোট নিয়েই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা সবচেয়ে বেশি। কংগ্রেস অবশ্য ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, বিহার, তামিলনাড়ু এবং কেরলেও জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনা সেরে ফেলেছে। ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেস জোট করছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঙ্গে। তামিলনাডু়তে তাদের জোটসঙ্গী ডিএমকে। তামিলনাডু়তে অবশ্য কংগ্রেসের হাত ধরেছে বামপন্থীরাও। বিহারে ঠিক উত্তরপ্রদেশের মতোই বিজেপি-বিরোধী মহাজোট তৈরির তোড়জোড় চলছে। লালু যাদবের নেতৃত্বে বিহারে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা একজোট হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ইতিমধ্যেই এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সঙ্গে আসন রফা সেরে ফেলেছে। আরও কয়েকটি ছোট দল এই জোটে যোগ দিতে পারে। শরদ পাওয়ার গত সপ্তাহে কথা বলেছেন মায়াবতীর সঙ্গে। রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের জন্য মায়াবতীর সঙ্গে জোট নিয়ে কথা চালাচ্ছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশে বিধানসভার ২৩০টি আসনের মধ্যে মায়াবতী ৫০টি আসন দাবি করেছিলেন। কংগ্রেস ছাড়তে রাজি ২২টি আসন। কিন্তু তিরিশের কমে মায়াবতী কিছুতেই রাজি নন।
বিরোধী জোটের কথা মাথায় রেখে উত্তরপ্রদেশে আসন ধরে রাখার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। পরপর দু’দিন লখনউয়ে সভা সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার, মোদির লখনউ সভার বক্তব্য নিয়ে আক্রমণে নেমেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের বক্তব্য, ভোট এগিয়ে আসতেই ফের প্রধানমন্ত্রী নিজেকে বারবার ‘গরিব’ বলে তুলে ধরতে শুরু করেছেন। এই সব কথা বলে তিনি ২০১৪ সালে সুফল পেয়েছিলেন। কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা ও সাংসদ আনন্দ শর্মা সোমবার বলেন, “মোদি দিনে কয়েক বার নামী ব্র্যান্ডের পোশাক বদল করেন। অথচ জনগণের চোখে ধুলো দিতে নিজেকে গরিব বলে তুলে ধরেন। বিজেপির অটলবিহারী বাজপেয়ী-সহ অতীতের সব প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন। অথচ তাঁরা কেউ সেটাকে রাজনীতিতে ইস্যু করেননি।” সেসবে পাত্তা দিচ্ছে না বিজেপি। শোনা যাচ্ছে প্রয়োজনে বিরোধী জোট ভাঙাতে মায়াবতীকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিতে পারে গেরুয়া শিবির। জোটে টানতে উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও একাধিক রাজ্যে মায়াবতীকে আসন ছাড়া হতে পারে বলে আরএসএস সূত্রে খবর। তবে এসবই রয়েছে আলোচনার স্তরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.