Advertisement
Advertisement
On Nation One Election

‘সংবিধান বিরোধী’ বলছে কংগ্রেস, তৃণমূলের মতে ‘গিমিক’, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নাকচ বিরোধীদের

মোদি সরকারের এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী, বলছেন বিরোধী নেতৃবৃন্দ।

Opposition leaders opposed one nation, one election
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:September 18, 2024 6:28 pm
  • Updated:September 18, 2024 6:44 pm  

নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: মোদির মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ প্রস্তাব। সব ঠিক থাকলে সংসদের আসন্ন অধিবেশনেই পেশ হবে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল। যদিও বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর বিরোধিতা করে এসেছে। বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, এই নীতি ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রের পরিপন্থী। বুধবার কংগ্রেস সভাপতি বললেন, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংবিধান বিরোধী নীতি। তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের বক্তব্য, বিষয়টা বিজেপির গিমিক ছাড়া কিছুই না।

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হয়েছিল। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। এদিন যা মন্ত্রিসভার সবুজ সংকেত পেয়েছে। লোকসভার আগামী অধিবেশনে পেশ হলেও বিল পাশ হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবার আইন পাশ হলেও সেই আইন কার্যকর করা নিয়েও বহু জটিলতা রয়েছে। এই অবস্থায় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে বিজেপির তৎপরতাকে গিমিক বললেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। তাঁর কথায়, “এক জাতি, এক নির্বাচন গণতন্ত্রবিরোধী বিজেপির আরেকটি সস্তা গিমিক মাত্র। কেন হরিয়ানা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচনের সঙ্গে মহারাষ্ট্র নির্বাচন ঘোষণা করা হয়নি? কারণ, মহারাষ্ট্র সরকার এই জুনের বাজেটে ‘লড়কি বহিন’ প্রকল্প ঘোষণা করেছে। প্রথম ধাপ আগস্টে মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অর্থ সাহায্য পৌঁছবে এবং দ্বিতীয় ধাপ অক্টোবরে সুবিধাভোগীরা সাহায্য পাবেন। আপনি একসঙ্গে তিনটি রাজ্য়ের নির্বাচনই করতে পারছেন না, সেখানে ‘এক নির্বাচন’ করবেন!

প্রথম থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। বুধবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে টুইট করেছেন, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ মানুষকে ভুলপথে চালিত করার বিজেপির কৌশল। এটা সংবিধান বিরোধী, গণতন্ত্রের বিরোধী, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী। দেশ কখনই এই নীতিকে গ্রহণ করবে না। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসেই এক দেশ, এক নির্বাচন-এর বিরোধিতা করে কোবিন্দের কমিটির কাছে চিঠি লিখেছিলেন। তৃণমূল নেত্রী বলেন, “ভারত আসলে একটা যুক্তরাষ্ট্র। কোথাও এক দেশ এক সরকারের কথা বলা নেই। এই মৌলিক বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে এক দেশ এক নির্বাচনের কথা ভাবা যায় না।” এই বিষয়ে মমতার আরও প্রশ্ন, “লোকসভার সঙ্গে সব রাজ্যের নির্বাচন করবেন কী করে? ১৯৫২ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনের সময় তা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য ও জাতীয়স্তরে নানা পালাবদলের কারণে সেই তালমিল ভেঙে গিয়েছে।” চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, “এই ধারনা আমাদের স্বৈরতন্ত্রের দিকেই নিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রকে কুক্ষিগত করতে চাইছে স্বৈরাতান্ত্রিক ব্যবস্থা। “

বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির আরও আশঙ্কা, এক দেশ, এক নির্বাচনকে কাজে লাগাবে বিজেপির মতো অর্থনৈতিক ভাবে প্রবল শক্তিশালী দল। তাদের প্রচারের ঢেউয়ে ভেসে যাবে তুলনায় ছোট আঞ্চলিক দলগুলি। যদিও সরকার পক্ষের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বিপুল অঙ্কের খরচ হয়ে থাকে, তা অনেকটাই কমে যাবে। গত মাসে লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সওয়াল করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি যুক্তি দেন, ঘন ঘন নির্বাচনে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা পড়ে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement