Advertisement
Advertisement

Breaking News

Lok Sabha Poll

কীভাবে শেয়ার বাজারে গায়েব লক্ষ কোটি! এক্সিট পোল ‘দুর্নীতি’ নিয়ে তদন্তের দাবি

মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরু হতে এগজিট পোলকে ‘ভুল’ প্রমাণিত করে মোদি-ব্রিগেডের পতনের সঙ্গেই ধাক্কা খায় বাজার।

Opposition Demanded to inquiry Lok Sabha poll 2024 exit poll
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:June 6, 2024 12:42 pm
  • Updated:June 6, 2024 3:26 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির আধিপত্য উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নাটকীয় মোড়। তাদের ‘অব কি বার ৪০০ পার’ স্লোগানের বিপরীতে, বিজেপি ২৫০-ও পার করতে পারেনি। ২০১৯-এর প্রাপ্তি ৩০৩-এরও অনেক আগে থামতে হয়েছে পদ্মশিবিরকে। তবে দুদিন আগেই, ১ জুন, শনিবার শেষ দফার নির্বাচনের পর সন্ধ‌্যায় বিভিন্ন সংস্থার এক্সিট পোল বা বুথ ফেরত সমীক্ষায় দাবি করা হয়, বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরছে মোদি সরকার। পরেরদিন, রবিবার শেয়ার বাজার বন্ধ ছিল। সোমবার বাজার খুলতেই হু-হু করে উঠতে থাকে সূচক।

মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরু হতে এগজিট পোলকে ‘ভুল’ প্রমাণিত করে মোদি-ব্রিগেডের পতনের সঙ্গেই ধাক্কা খায় বাজার। ফলে সোমবার একদিকে যেমন কিছু সংস্থা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা মুনাফা করে বেরিয়ে গিয়েছে, সেখানে পরের দিনই বহু ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগকারী ডুবে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা ওই এগজিট পোলকে ‘স্ক‌্যাম’ আখ‌্যা দিয়ে এর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছে। তাদের দাবি, এক্সিট পোলের ভবিষ্যদ্বাণী এবং প্রকৃত ফলাফলের মধ্যে পার্থক্য রাজনৈতিক ও আর্থিক উভয় ক্ষেত্রেই মারাত্মক পরিণতির দিকে পরিচালিত করেছে। বিরোধীরা ভারতের নির্বাচন কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়াকে (সেবি) অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

Advertisement

 

Advertisement

[আরও পড়ুন:  চন্দ্রবাবুর সঙ্গে হঠাৎ সাক্ষাতে স্ট্যালিন, দিল্লি দরবারের জল গড়াবে কোনদিকে?]

বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদল পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি, মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরে এবং শরদ পাওয়ারের দল, রাজস্থান ও হরিয়নায় কংগ্রেস ভালো ফল করেছে। এই ফল এগজিট পোল নিয়ে সন্দেহ জাগিয়েছে, যেখানে বিজেপি নেতৃত্বে এনডিকে তুমুলভাবে ‘জিতিয়ে’ দিয়েছিল। ফলে, প্রকৃত ফল ঘোষণার পর বিরোধীরা ওই এগজিট পোলে হেরফের, চক্রান্ত ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে।

পাশাপাশি, জনপ্রিয় ইউটিউবার ধ্রুব রাঠী, এগজিট পোলের দাবি সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি, ‘এক্স’ হ‌্যান্ডলে লিখেছেন, এই তথ‌্যগুলি শেয়ারবাজারকে প্রভাবিত করার জন্য কারচুপি করা হয়েছিল বা এই ফলাফলকে বাধ্য করার জন্য অন্তর্নিহিত হুমকি ছিল কি না সেই প্রশ্ন উঠছে। অপ্রত্যাশিত ভোটের প্রবণতা আর্থিক বাজারের মাধ্যমে শকওয়েভ পাঠিয়েছে, যা একটি ঐতিহাসিক বিপর্যয়ের দিকে পরিচালিত করেছে।

 

[আরও পড়ুন: দিল্লিতে অখিলেশের বাড়িতে অভিষেক, ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পরদিনও সক্রিয় তৃণমূলের ‘সেনাপতি’]

প্রসঙ্গত, ভারতে রাজনীতি এবং শেয়ার বাজারের মধ্যে জটিল ও বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক ঘটনা এবং সিদ্ধান্ত উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব এবং বাজারের গতিবিধিকে প্রভাবিত করতে পারে। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ নির্বাচন, রাজ্য নির্বাচন, এবং উপনির্বাচন বাজারের অস্থিরতার কারণ হতে পারে। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং স্পষ্ট নীতির পক্ষে। একটি সংস্কারপন্থী সরকারের জন্য একটি শক্তিশালী জনাদেশ সাধারণত বাজারের মনোভাবকে বাড়িয়ে তোলে। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে এমন ঘটনা ঘটেছিল, যখন অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রত্যাশায় সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল। আবার ২০১৬ সালে নোটবন্দি এবং ২০২০ সালে কোভিড-১৯ পর্বে বাজার নির্মম পতনের সাক্ষী হয়েছিল।

এক্সিট পোলে দেখানো প্রবণতায় সেনসেক্স ২৫০০ পয়েন্টের বেশি বেড়ে গিয়েছিল। নিফটিও একদিনে অনেকটাই উঠে গিয়েছিল। তবে পরের দিনই সেনসেক্স ৪ হাজার পয়েন্টেরও বেশি কমেছে, যা দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ইন্ট্রাডে পতন। সেইভাবে নিফটিও এক দিনের সবচেয়ে খারাপ পতনের সাক্ষী হয়েছে। বিজেপি স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যখন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করছে, সেই সময় ইক্যুইটি মার্কেট প্রচুর বিক্রির চাপের মুখোমুখি হয়। দর পড়তে থাকে শেয়ারের।

এদেশে শেয়ারদর ম‌্যানিপুলেশন বা কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়ানোর ভূরিভূরি উদাহরণ রয়েছে। তা রুখতে আইনও রয়েছে। বিরোধীরা ভারতের নির্বাচন কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়াকে (সেবি) অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা ‘প্রতারণামূলক এগজিট পোলস্টার, দুর্নীতিবাজ মিডিয়ার মালিক, সংবাদ উপস্থাপক এবং স্টক মার্কেট ফটকাবাজদের কথিত সম্পর্ক’ তদন্তের জন্য স্বতঃপ্রণোদিত প্রক্রিয়ার দাবি করেছে। বিরোধীরা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। তাদের বক্তব‌্য, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে দায়ীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

[আরও পড়ুন:  ফের শিবির বদলাবেন নীতীশ? বিমানে ‘পলটুরাম’-কে কোন মন্ত্র দিয়েছিলেন তেজস্বী]

ভোটপ্রচার যখন তুঙ্গে, সেই সময় শেয়ার কেনার জন্য লগ্নিকারীদের বারবার আহ্বান করতে দেখা গিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখেও শোনা গিয়েছে একই কথা। এত কিছু সত্ত্বেও শেয়ার বাজারের এই পতন দেখে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভোটের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল বলেই বাজারের পরিস্থিতি অস্থির হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিজেপি-র একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার অন্যতম কারণ। একার ক্ষমতায় বিজেপি সরকার গড়তে পারবে না। এনডিএ-র শরিকদলের উপর নির্ভর করতে হবে তাদের। সে ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজ আটকে যেতে পারে বলেও আতঙ্কিত লগ্নিকারীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ