সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এই খবর প্রকাশিত হতেই তুমুল রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে। গচ্ছিত সমস্ত অর্থই ‘কালো টাকা’ নয় বলে মুখরক্ষার চেষ্টা করেছে সরকার। অন্তর্বর্তী অর্থমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কোনও বেআইনি কাজের প্রমাণ মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, সরকারের সদিচ্ছা ও দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ২০১৪-য় নির্বাচনী প্রচারে ক্ষমতায় এসেই বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফেরানোর অঙ্গীকার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই লক্ষ্যে সরকার একাধিক পদক্ষেপ করলেও কাজের কাজ করতে পারেনি। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এই ঘটনাকে মোদির বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে পারে বিরোধীরা। শুক্রবার রাহুলের টুইটে তারই ইঙ্গিত মিলেছে। আবার ব্লগে পাল্টা আক্রমণ করেছেন অরুণ জেটলিও। নোটবন্দিকে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন, ‘শাবাশ! #ডিমানিটাইজেশন? টাকা উড়েছে সুইস ব্যাঙ্কে। ক্ষতি ভারতের।’
Bravo! #DeMonetisation?
Swiss Bank money flying. India losing.— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) June 29, 2018
চাপের মুখে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সাফাই, সুইস ব্যাঙ্কে গচ্ছিত ভারতীয়দের সমস্ত অর্থ কালো টাকা নয়। তবে আর্থিক প্রতারণা ও করফাঁকির ঘটনায় দোষীরা কোনও মতেই ছাড় পাবে না। শুক্রবার পীযূষ গোয়েল সাফ জানিয়েছেন, বর্তমানে কারও বিদেশে কালো টাকা পাচারের সাহসই নেই। মোদি সরকারের ব্যাপক পরিশ্রমের জেরে তা সম্ভব হয়েছে। তবু কারও বিরুদ্ধে বেআইনি কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮-র ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব অ্যাকাউন্টের তথ্য সুইজারল্যান্ড চলতি আর্থিক বছর শেষে ভারতকে দেবে বলে জানান গোয়েল।
তাতেও অবশ্য সামলানো যাচ্ছে না। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এ ব্যাপারে মোদির অতীতের বিবৃতিগুলি স্মরণ করিয়ে খোঁচা দিয়েছেন। তাঁর টুইট, ‘২০১৪-তে তিনি বলেছিলেন: সুইস ব্যাঙ্ক থেকে সমস্ত ‘কালো’ টাকা ফেরত এনে প্রত্যেক ভারতীয়র অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেবেন। ২০১৬-তে তিনি বলেছিলেন: নোট বাতিল ভারতের ‘কালো’ টাকার সমস্যার সমাধান করবে। ২০১৮-তে তিনি বলছেন: সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থের ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির সবটাই ‘সাদা’ টাকা। সুইস ব্যাঙ্কে কোনও ‘কালো’ টাকা নেই।’ কংগ্রেস—সহ অন্যান্য বিরোধী দল বলেছে, সরকার সুইস ব্যাঙ্কে আমানতকারীদের নামের তালিকা কেন প্রকাশ করছে না? কংগ্রেসের টুইটার হ্যান্ডেলে বলা হয়েছে, ‘মোদিজি, নোট বাতিল তো ব্যর্থ হল। আপনার সমস্ত প্রতিশ্রুতি ও দাবি চূড়ান্ত ব্যর্থ। এখন তো বলুন আপনার নাকের নিচে এই কালো টাকা সুইস ব্যাঙ্কে কে জমা করেছে?’
2014, HE said: I will bring back all the “BLACK” money in Swiss Banks & put 15 Lakhs in each Indian bank A/C.
2016, HE said: Demonetisation will cure India of “BLACK” money.
2018, HE says: 50% jump in Swiss Bank deposits by Indians, is “WHITE” money. No “BLACK” in Swiss Banks! pic.twitter.com/7AIgT529ST
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) June 29, 2018
যার জবাব দিতে আসরে নেমেছেন আপাতত বিশ্রামে থাকা অসুস্থ অরুণ জেটলি। তিনি ব্লগে লেখেন, ‘সমস্ত গচ্ছিত অর্থই করফাঁকি দিয়ে জমানো হয়েছে বা এক দশক আগের মতো এখনও সুইজারল্যান্ডে শুধু কালো টাকাই জমা পড়ে বলে ভেবে নেওয়া খুবই হাস্যকর অনুমান।’ তাঁর কটাক্ষ, যাঁরা বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন, তাঁরা অন্তত ‘মৌলিক বিষয়গুলি’ বুঝুন।
বিদেশি ব্যাঙ্কে পাচার করা বেআইনি টাকার বিরুদ্ধে মোদি সরকার তিন বছর ধরেই অভিযান চালাচ্ছে। যার জেরে সুইস ব্যাঙ্কে ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল বলে দাবি ছিল সরকারের। কিন্তু গত বছর পুরো উলটো ছবি দেখা গিয়েছে। ২০১৭-য় সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে ভারতীয়দের সঞ্চিত অর্থ ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে।
কালো টাকায় রাশ টানতে সুইজারল্যান্ড সরকারের সঙ্গে তথ্য বিনিময়ের চুক্তি করেছে ভারত সরকার। চুক্তি অনুসারে ২০১৯ অর্থবর্ষ শেষ হতেই ভারতের হাতে সমস্ত তথ্য তুলে দেবে সুইস ব্যাঙ্কগুলি। এর পরই কালো টাকার হদিশ পেতে কাজে নামবে ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। কালো টাকা উদ্ধারের জন্য ২০১৬-র ডিসেম্বরে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। সেই ঘটনার পর অনেক জল গড়িয়েছে। তর্ক বিতর্কও হয়েছে বিস্তর। মোদি সরকার বারবারই দাবি করেছিল যে, নোটবন্দির ফলে প্রচুর কালো টাকা উদ্ধার হয়েছে। পরবর্তীকালে যে তথ্য উঠে
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.