সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোভেল করোনা ভাইরাস ঠেকাতে এত্ত গবেষণা চলছে দিকে দিকে। COVID-19 পজিটিভ প্রায় প্রত্যেক রোগীই সেই গবেষণার অংশ। যাঁরা সুস্থ হয়ে ফিরছেন, তাঁদের
প্রতি সাধারণ মানুষ থেকে চিকিৎসকদের প্রশ্ন বোধহয় আরও বেশি। গবেষণার সাফল্যের চাবিকাঠি তো সেখানেই লুকিয়ে। তারই মাঝে দক্ষিণ কর্ণাটকের এক পরিবারকে নিয়ে এখন গবেষক মহলে
তুমুল চর্চা। ব্যাপারটা যে একেবারেই ব্যতিক্রমী! ওই পরিবারে দশ মাসের এক শিশুই একমাত্র করোনা আক্রান্ত সদস্য। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে দিনরাত অসুস্থ শিশুর সেবাযত্ন করেও পরিবারের
আর কারও শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়নি, বিশেষত মায়ের শরীরে। আর এই বিষয়টিই অবাক করেছে চিকিৎসকদের। একে বলা হচ্ছে – সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা। যেখানে সংক্রমণের উৎস খুঁজতে
হিমশিম দশা বিশেষজ্ঞদের।
দক্ষিণ কর্ণাটকের সাজিপানাড়ু গ্রাম। গত ২৭ মার্চের সেখানকার এক পরিবারের দশ মাসের শিশুর শরীরে নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিল শিশুটি। করোনা
রিপোর্ট পাওয়ার পর গোটা পরিবারকে প্রথমে কোয়ারেন্টাইন করে দেওয়া হয়। তারপর একে একে সকলের COVID-19 পরীক্ষা হয়। প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা যায়, মা, ঠাকুমা-সহ কারও শরীরে কোনও সংক্রমণ নেই। অথচ শিশুর অসুস্থতার প্রথম থেকে তাঁরাই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যের দেখভাল করেছেন। এতে প্রাথমিভাবে বিস্মিত হন চিকিৎসকরা। তবু নিয়ম মেনে ১৪দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বলা হয় পরিবারটিকে। ১২ এবং ১৩ তম দিনে ফের পরীক্ষা করা হয়। তাতেও রিপোর্ট নেগেটিভ। এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে অত ছোট শিশুর শরীরে তাহলে কোথা থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হল?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে নানা ধরনের মতামত উঠে আসে। সাজিপানাডু গ্রামটি কেরলের কাসারগড় এবং কর্ণাটকের সীমানায়। স্থানীয় চিকিৎসকদের ধারণা, কাসারগড় থেকে কেউ সাজিপানাড়ুতে এসেছিল। এই পরিবারের সঙ্গে মেলামেশাও করেছিল। তা থেকেই বাচ্চাটির শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়। যদি তাইই হয়ে থাকে, তাহলে কাসারগড়ের ওই ব্যক্তিও তো করোনা পজিটিভ হবেন। তাঁরই বা খোঁজ কোথায়?
এ প্রসঙ্গে দিল্লির এক ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশ্যালিস্টের বক্তব্য, বাইরে থেকে ওই গ্রামে আগত ব্যক্তির শরীরে কোনও উপসর্গই ছিল না। তাই তাঁর পরীক্ষারও প্রয়োজন হয়নি। তাঁর থেকে এই শিশুর শরীরে ভাইরাসের প্রবেশ ঘটে তার লক্ষ্ণণগুলো প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ ওই ব্যক্তির শরীরে COVID-19’র জীবাণু থেকে থাকলেও, তা সুপ্ত ছিল। শিশুশরীরে যার প্রকাশ হয়েছে। তাহলে এটাও নবজাতক ভাইরাসের আরেকটি ধরন? তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। বাইরের কারও দ্বারা সংক্রমণ হলেও হতে পারে, একথা শোনার পর থেকে গোটা গ্রামটিকেই কোয়ারেন্টাইন করে ফেলেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে, জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, দশ মাসের করোনা আক্রান্ত শিশু ধীরে ধীরে সেরে উঠছে। ৫ তারিখ তার আইসোলেশনের মেয়াদ শেষ। ওই দিন আরেকটি পরীক্ষা হবে। তাতে ১০০ শতাংশ সুস্থতার প্রমাণ মিললেই মায়ের কোলে ফিরে যেতে পারবে সে। এরপরও অবশ্য চিকিৎসকদের নজর থাকবে তার দিকে। কারণ ওই, উৎস সন্ধান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.