সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার দাপট সামাল দিতে লকডাউনের তেতো ওষুধ দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। আর তাই দেশজুড়ে প্রায় বন্ধ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড। না জিনিস তৈরি হচ্ছে, না আছে পণ্যের চাহিদা। আর এই পরিস্থিতি সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়তে চলেছে চাকরিজীবীদের উপর। একদিকে তাঁদের মাথার উপর ছাঁটাইয়ের খাড়া ঝুলছে। অন্যদিকে, বন্ধ বেতন বৃদ্ধি বা প্রমোশনও। কোনও কোনও সংস্থা তো আবার সরাসরি কর্মীদের বেতনে কোপ মারছে। সবমিলিয়ে বেসরকারি চাকরিজীবীদের যে রাতের ঘুম উড়েছে তা বলাই
বাহুল্য।
বহুজাতিক সংস্থা কর্ন ফেরির রিপোর্ট বলছে, ৩৬ শতাংশ ভারতীয় সংস্থা খরচ বাঁচাতে কর্মীদের বেতন আটকে দিচ্ছে। আবার ২৩ শতাংশ সংস্থা কর্মীদের পদোন্নতি আটকে দিয়েছে। ১৮ শতাংশ সংস্থা বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিয়েছে। লকডাউন শুরুর দিন থেকে সরকার বেসরকারি সংস্থারগুলির কাছে আবেদন জানিয়েছিল, যাতে কর্মীদের বেতন কাটা বা বন্ধ না করা হয়। এমনকী, কর্মী ছাঁটাই স্থগিত রাখতে আরজি জানিয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ সংস্থাই তাতে কান দেয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। কর্ন ফেরির রিপোর্ট বলছে, ৮৪ শতাংশ সংস্থার হয় কর্মী ছাঁটাই করে ফেলেছে, নয়তো সেই পথেই হাঁটছে। ফলে দেশে যে বেকারত্ব বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সমীক্ষার রিপোর্ট প্রসঙ্গে সংস্থার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক রূপাংক চৌধুরি বলেন, “এই অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে প্রত্যেকটি সংস্থা নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই খরচ কমাতে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত তাদের নিতে হচ্ছে।”
তবে এই সমীক্ষা যে একেবারেই বাস্তূবে মাটিতে পা রেখেই তৈরি করা হয়েছে তা বোঝা গেল বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেই। কলকাতার বাসিন্দা বিমা সংস্থার কর্মী
ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় জানালেন, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চের মাসের রিপোর্টের উপর নির্ভর করে এপ্রিলে আমাদের বেতন বাড়ে। এমনকী পদোন্নতিও হয়। কিন্তু এবার ফেব্রুয়ারি
থেকেই প্রায় কাজ বন্ধ। ফলে কোম্পানি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এবছর বেতনও বাড়বে না, পদোন্নতি হবে না।” আরও এক বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী দীপ্তাংশু নন্দী বলেন, দুবছর ধরে পদোন্নতিটা আটকে আছে। এবছর নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু এই লকডাউন আর মহামারির জেরে সেটা আর হল না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.