সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাথুরাম গডসে থেকে হেমন্ত কারকারে, অভিশাপ থেকে কালা জাদু। লোকসভার আগে থেকেই সাধ্বী প্রজ্ঞার বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বারবার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে এ সম্পর্কে মুখ খোলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তারপর কিছুটা হলেও সংযত হয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের ভোপালের ওই বিজেপি সাংসদ।কিন্তু, কথায় আছে স্বভাব যায় না মরলেও। সেটাই সম্প্রতি প্রমাণ করেছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। বিরোধীরা মারক শক্তির সাহায্যে সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি ও বাবুলাল গৌড়ের মতো নেতা-নেত্রীদের জীবন নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন। যার জন্য হাসির খোরাক হতে হয়েছে তাঁকে। মাথা নিচু হয়েছে দলেরও। দেশজুড়ে বয়েছে সমালোচনার ঝড়। এর প্রেক্ষিতে ভোপালের সাংসদের মুখে লাগাম টানার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হল, আপাতত আর কোনও জনসভায় বক্তব্য রাখতে পারবেন না তিনি। পাশাপাশি তিনি যদি ফের কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা দিল্লির নেতাদের জানানোর নির্দেশ দেওয়া হল।
মধ্যপ্রদেশ বিজেপির একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য কিছুদিন ধরেই সাধ্বী প্রজ্ঞাকে বক্তব্য রাখতে দেওয়া হচ্ছিল না। সম্প্রতি সুষমা স্বরাজের স্মরণসভাতে বক্তব্য রাখার জন্য দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু, সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি। যদিও গত সোমবার বাবুলাল গৌড়ের স্মরণসভায় তাঁকে বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়। আসলে বাবুলাল গৌড় ভোপালের বাসিন্দা হওয়ায় স্থানীয় সাংসদকে উপেক্ষা করা যায়নি। আর সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন তিনি! ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে চলে এসেছেন সংবাদের শিরোনামে। যার জের ফের একবার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে। তবে এরপর থেকে আর কোনও জনসভায় তিনি যেন বক্তব্য রাখতে না পারেন তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব।
শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ভোপালের সাংসদকে এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি রাকেশ সিং। দলের নির্দেশ না পেলে কোনও সভায় বক্তব্য রাখতে বারণ করা হয়েছে তাঁকে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যদি তিনি ফের বেফাঁস মন্তব্য করেন, তা হলে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সোমবার মধ্যপ্রদেশে প্রয়াত বিজেপি নেতা বাবুলাল গৌড় এবং বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির স্মরণসভায় গিয়ে ভোপালের সাংসদ দাবি করেন, বিরোধীরা বিজেপি নেতা-নেত্রীদের মারতে ‘মারক শক্তি’ ব্যবহার করছে। তাঁর কথায়, “একজন সাধু তাঁকে বলেছেন, বিরোধীরা মারক শক্তি ব্যবহার করছে অনুগত ও কর্মনিষ্ঠ বিজেপি কর্মীদের শেষ করতে। আমাকেও নিশানা করা হয়েছে। আমাকে সাবধানেও থাকতে বলেছেন। সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, বাবুলাল গৌড়ের চলে যাওয়ার পর মনে হচ্ছে, তিনি ঠিক কথাই বলেছিলেন। মন্ত্রতন্ত্র দিয়ে কারও ক্ষতি করাই মারক শক্তি।” সাধ্বীর এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিরোধী শিবির। বিজেপি সাংসদকে তুলোধোনা করেছে কংগ্রেস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.