সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে হঠাত করে দেশের আইন ব্যবস্থার বহু প্রতীক্ষিত এই ‘সংস্কার’কে একেবারে মোক্ষম চালের মতো ব্যবহার করেছে বিজেপি। UCC ইস্যু হিসাবে উঠে আসতেই বিরোধী শিবির শশব্যস্ত। কংগ্রেস তেড়েফুঁড়ে এর বিরোধিতা করছে। আবার নিজেদের বিরোধী শিবিরের অংশ হিসাবে দাবি করা আম আদমি পার্টি আবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করার কথা স্পষ্ট ঘোষণা করে দিচ্ছে। অর্থাৎ UCC নিয়ে বিরোধী শিবিরও দ্বিধাবিভক্ত।
একদিন আগেই এক জনসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে জোরাল সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। প্রধানমন্ত্রী বলে দেন, এক দেশে দু’রকম আইন থাকাটা কাম্য নয়। বস্তুত মোদির কথায় ইঙ্গিত মিলেছে, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) চালু করার চেষ্টা করতে চলেছে কেন্দ্র। সেই সম্ভাবনা স্পষ্ট হতেই আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস।
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস (Congress) নেতা পি চিদম্বরম বলছেন,”মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি অতি সাধারণ একটা ব্যাপার। আমার মনে হয়, শেষ আইন কমিশনের রিপোর্টে কী বলা হয়েছিল, সেটা ওনার পড়ে নেওয়া উচিত। এই মুহূর্তে বিজেপির বিভাজনমূলক নীতির জেরে দেশ এমনিতেই বিভক্ত। এই পরিস্থিতিতে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে বিভাজন আরও বাড়বে। এভাবে কোনও সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার মানুষের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না।” প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী গোটা দেশকে একটা পরিবারের সঙ্গে তুলনা করছেন। সার্বিকভাবে দেখতে গেলে, সেটাকে ঠিক মনে হতেও পারে। কিন্তু বিষয়টা পুরোপুরি এক নয়। একটা পরিবার জুড়ে থাকে রক্তের বন্ধনে। আর দেশকে একত্রিত রাখতে প্রয়োজন হয় সংবিধানের। যা কিনা আসলে রাজনৈতিক এবং আইনি নথি। তাছাড়া পরিবারেও তো বিভেদ থাকে।” তৃণমূলও প্রকাশ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতা করেছে। এরাজ্যের শাসক দলের বক্তব্য, নিজেদের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে অহেতুক বিতর্ক বাড়াচ্ছে বিজেপি।
কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা খোলাখুলি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতা করলেও বিরোধী শিবিরেরই গুরুত্বপূর্ণ শক্তি আপ (AAP) প্রকাশ্যে UCC-কে সমর্থন করার বার্তা দিয়ে দিয়েছে। আপ নেতা সন্দীপ পাঠক বলছেন, “আমরা অভিন্ন দেওয়ানি বিধিকে সমর্থন করি। সংবিধানের ৪৪ নম্বর ধারাতেও তাই বলা হয়েছে। তবে আমাদের মনে হয়, এটা নিয়ে আরও আলোচনা হওয়া উচিত। সব রাজনৈতিক দল এবং সব ধরনের সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.