সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের মুখে বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। কাশ্মীরকে আলাদা দেশ বানাতে চেয়ে তাঁর গলায় শোনা গেল ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদের সুর। কাশ্মীরের জন্য আলাদা ওয়াজির-এ-আজম (প্রধানমন্ত্রী) ও আলাদা সদর-এ-রিয়াসত (রাষ্ট্রপতি) চাইলেন ওমর আবদুল্লা।
সংবিধানের ৩৫(এ) এবং বিতর্কিত ৩৭০ ধারা নিয়ে চাপানউতোর এখনও চলছে। এর মধ্যে কাশ্মীরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির দাবি জানিয়ে নয়া বিতর্কের জন্ম দিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। তাঁর দল এই দাবিকে আরও একবার সামনে আনবে বলে সোমবার মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিন জম্মু-কাশ্মীরের বান্দিপোরায় এক জনসভায় ৩৫ (এ) এবং ৩৭০ ধারার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের স্বতন্ত্র সত্ত্বা বজায় রাখতে আমরা সংবিধানে কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমরা বলেছিলাম, আমাদের স্বতন্ত্র পরিচিতি বজায় রাখতে হবে। আমাদের নিজস্ব আইন, পতাকা থাকবে। একসময় আমাদের সদর-এ-রিয়াসত (রাষ্ট্রপতি) এবং ওয়াজির-এ-আজম (প্রধানমন্ত্রী) ছিলেন। আল্লার অসীম কৃপায় আমরা তা ফের কাশ্মীরে ফিরিয়ে আনব।’ ৩৫(এ) এবং ৩৭০ ধারায় হাত দিলে আগামী দিনে ভারত থেকে কাশ্মীর আলাদা হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ওমরের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন নরেন্দ্র মোদি। এই ইস্যুতে কংগ্রেসকে তার অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। তেলেঙ্গানার সেকেন্দ্রাবাদে এক নির্বাচনী জনসভা থেকে কংগ্রেসের কাছে মোদি জবাব চেয়েছেন, ‘আপনাদের জোটসঙ্গী ন্যাশনাল কনফারেন্স কীভাবে এমন দেশবিরোধী দাবি তোলার সাহস পায়? এ ব্যাপারে কংগ্রেসের অবস্থান কী, তা আপনারা স্পষ্ট করুন।’ওমর আবদুল্লাকে একহাত নিয়ে তাঁর বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেছেন, কাশ্মীরের মাটিতে জমি ও জনপ্রিয়তা দুই’ই হারাচ্ছে দুই স্থানীয় রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)। তাই নিজেদের শক্তি জাহির করতে এবং প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতেই ওই দুই দলের নেতৃত্ব লাগামছাড়া ভারত বিরোধী বিষ উগরে দিচ্ছেন। জেটলি বলেন, ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরে যখন ভারতভুক্তি হয়েছিল তখন ‘৩৫এ’ অনুচ্ছেদটির অস্তিত্ব ছিল না কাশ্মীর এবং ভারতের সংবিধানে। এটা গোপনে ১৯৫৪ সালে ঢোকানো হয়েছিল ভারতের সংবিধানে। এখন এই অনৈতিক বিধি তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠতেই হিংস্র হয়ে উঠেছেন পিডিপি ও এনসি নেতৃত্ব। এঁরা এটাকেই বলছেন ভারতের সংবিধানের সঙ্গে বাকি কাশ্মীরের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র। কিন্তু যেটা ভারতভুক্তির সময় বৈধ নীতি ও বিধি হিসাবে সংবিধানেই স্বীকৃতি ছিল না যেটি রাজনৈতিক স্বার্থে গোপনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল সেটি কীভাবে ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের যোগসূত্র হয়? তাছাড়া ৩৫(এ) থাকবে না বাতিল করা হবে সেটি এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। সেটি ভোটের ইস্যু হতে পারে না।
জেটলি বলেছেন, ওমর আবদুল্লা সোমবার ভোটের লোভে যা বলেছেন সেটি আসলে পাকিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতারই প্রতিফলন। এটা থেকেই বোঝা যায়, ‘মিথ্যে ভাবাবেগ’ দিয়ে ওঁরা কতটা দেশের ক্ষতি করছেন এবং সেই সঙ্গে কাশ্মীরের মানুষেরও ক্ষতি করছেন। আমাদের ‘নতুন ভারত’ কোনও সরকারকেই এঁদের দাবি মেনে নেওয়ার মতো ঐতিহাসিক ভুল করতে দেবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.