সুব্রত বিশ্বাস: একেই বোধহয় বলে ‘রাখে হরি তো মারে কে?’ তবে রাখার জন্য এই ‘হরি’ অর্থাৎ ঈশ্বরের আবির্ভাব যে কখন কোথা থেকে হবে, তা বোধহয় কেউই জানেন না। ঠিক তেমনই হল মুম্বইয়ের (Mumbai) কল্যাণ স্টেশনে। চলন্ত ট্রেনের (Running train) তলায় পড়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পেলেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। এখানে তাঁর ‘হরি’ হয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন খোদ ট্রেনচালক এবং সহকারী চালক। তাঁদের তৎপরতাতেই প্রাণ বাঁচল বৃদ্ধের। আর উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তাঁর প্রাণ রক্ষা করার জন্য আর্থিক পুরস্কার পেলেন দুই চালক।
ঘটনা ঠিক কী? রবিবার দুপুর ১২.৫৩ নাগাদ মুম্বইয়ের কল্যাণ স্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল মুম্বই-বারাণসী স্পেশ্যাল ট্রেন। ঠিক সেই সময়ে ট্রেনের একেবারে সামনে দিয়ে লাইন পার হচ্ছিলেন এক প্রবীণ ব্যক্তি। বড় বিপদের আঁচ করে চিফ পারমানেন্ট ইন্সপেক্টর সন্তোষ কুমার চিৎকার করে চালক ও সহকারী চালকের নজরে আনেন বিষয়টি। নিমেষের মধ্যে এমার্জেন্সি ব্রেক (Emergency) কষেন তাঁরা। ট্রেনটি একেবারে সঙ্গে সঙ্গে থেমে গেলেও বৃদ্ধ ট্রেনের নিচে গিয়ে পড়েন। তাঁর দেহের উপর দিয়ে ইঞ্জিনের একেবারে সামনের কাউ ক্যাচার চলে যায়। তবে অক্ষত থেকে যান তিনি। চালক এস কে প্রধান ও সহকারী চালক রবিশংকর জি তড়িঘড়ি ট্রেন থেকে নেমে ইঞ্জিনের তলা থেকে বৃদ্ধকে বের করে আনেন। সামান্য আহত হয়েছেন তিনি।
এত বড় দুর্ঘটনার পরও এভাবে বৃদ্ধের ফিরে আসার কাহিনি মুহূর্তের মধ্যে চাউর হয়ে যায়। চালক ও সহকারী চালকের উপস্থিত বুদ্ধি ও তৎপরতায় এই অসাধ্য সাধনের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন সবাই। সেন্ট্রাল রেলের (Central Railway) জিএম অলোক কংসাল তাঁদের কাজের পুরস্কার স্বরূপ দু’হাজার টাকা করে ‘স্পট ক্যাশ’ হাতে তুলে দিয়েছেন। এই তৎপরতাকে তাঁদের মানবিকতা ও কর্মদক্ষতার পরিচয় বলে দেখছেন জিএম (GM) ও রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তবে এমন বিপজ্জনকভাবে রেললাইন পারাপার বেআইনি। বিপদের ঝুঁকিও অনেক। তা আরও একবার মনে করিয়ে দিয়ে রেলযাত্রীদের সতর্ক করেছেন জিএম অলোক কংসাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.