সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নার্সদের (Nurse) জন্য লিখিত সমাজবিদ্যার একটি বইয়ে অধ্যায় ছিল ‘পণপ্রথার (Dowry) সুফল’ নিয়ে! সেই বইয়ের একটি পাতার ছবি ভাইরাল হতেই বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছিল। অবশেষে বইটি বাজার থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করল বইটির প্রকাশনা সংস্থা। এদিকে বইয়ের লেখকের অবিলম্বে কড়া পদক্ষেপের দাবিতে সোচ্চার হল দিল্লি মহিলা কমিশন।
জেপি ব্রাদার্স মেডিক্যাল পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামের ওই প্রকাশনা সংস্থার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, গত ৫ দশক ধরে তারা মেডিক্যাল বিষয়ক নানা ধরনের বই প্রকাশ করেছে। এই অভিজ্ঞতা থেকে তারা বুঝতে পারছে অভিযোগের গুরুত্বের দিকটি। ফলে অবিলম্বে ওই বই বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
এদিকে দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান স্বাতী মালিওয়াল বইটির লেখকের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আরজি জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন, যেভাবে বইটিতে পণপ্রথাকে মহিমান্বিত করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক।
মঙ্গলবার শিব সেনা নেত্রী ও রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি শেয়ার করেছিলেন ওই বইয়ের একটি পাতা। যাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় নেট দুনিয়ায়। দেখা যায়, বইটিতে রীতিমতো ফলাও করে ছাপা হয়েছে ‘পণপ্রথার সুফল’ শীর্ষক একটি অংশ। কী লেখা হয়েছে সেখানে? রীতিমতো পয়েন্ট ধরে ধরে দেখানো হয়েছে সমাজের জন্য পণপ্রথা কতটা জরুরি!
সেখানে বলা হয়েছে, নতুন সংসারকে সাজিয়ে তুলতে পণপ্রথা অত্যন্ত জরুরি। বালিশ, বিছানা, পাখা, টিভি, রেফ্রিজারেটর, বাসনকোসনের মতো নানা সরঞ্জাম এমনকী যানবাহনও দেশের সর্বত্র পণের সময় দেওয়া হয় বলেও দাবি করা হয়েছে ওই লেখায়।
পাশাপাশি এও বলা হয়েছে, বাবার সম্পত্তির একাংশ এভাবে পণের মাধ্যমেই পেয়ে যান মেয়েরা। পণের টাকা যাতে কম দিতে হয়, সেই কারণেই অনেকে মেয়েদের পড়াশোনা করান। এতে পরোক্ষে নারীশিক্ষারই প্রসার হয়, এমন দাবিও করেছেন লেখিকা। তবে সবথেকে বিপজ্জনক সম্ভবত শেষের কথাটি। সেখানে বলা হয়েছে কুৎসিত মেয়েদের কুৎসিত কিংবা সুদর্শন ছেলেদের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া সম্ভব যদি পণ আকর্ষণীয় হয়।
পণপ্রথার মতো কুপ্রথার অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসার লড়াই দীর্ঘদিন ধরে জারি সমাজে। তবুও কী করে একটি পাঠ্যবইয়ে এমন কথা ছাপা সম্ভব তা ভেবে পাচ্ছেন না মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বইটিকে বাজার থেকে তুলে নেওয়ার আরজি জানাল প্রকাশনা সংস্থা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.