নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: এরআরসিকে হাতিয়ার করেই বিজেপি আগামী দিনে বাংলার মসনদ দখল করতে চাইছে। এমন সম্ভাবনাই প্রবল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যেভাবে বাংলার প্রসঙ্গে বলার সময় জোরালোভাবে এনআরসি ইস্যুকে সামনে তুলে ধরেছেন তাতে রাজ্যের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি অর্থাৎ এনআরসি যে বিজেপির প্রচারের অন্যতম ইস্যু হবে, সেই বার্তাই মিলেছে।
বৃহস্পতিবার, একটি জাতীয় বৈদ্যুতিন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এনআরসি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে শাহ বলেন, “বাংলায় এনআরসির কথা বলবই। আগামী নির্বাচনে বাংলায় এনআরসি অবশ্যই একটা ইস্যু। বাংলায় এবারের নির্বাচনেও এনআরসি ইস্যু ছিল।” লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপি যে সাফল্য লাভ করেছে তার পিছনে অন্য বিষয়ের পাশাপাশি এনআরসিও ছিল বলে শাহ মন্তব্য করেছেন। বাংলায় যে তাঁরা আগামী দিনে ক্ষমতা দখল করবেন একথা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বলে আসছেন শাহ। এদিনও তাঁর মুখে সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি শোনা গিয়েছে।
শাহ বলেছেন, “বাংলায় দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আমরা ক্ষমতায় আসব। এত অত্যাচার এবং রাজনৈতিক হত্যার পরও আমরা ১৮টি আসন পেয়েছি। বাংলায় বিজেপির সাফল্য নিয়ে যে দ্বিধা ছিল তা কেটে গিয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগেও আমি বলছিলাম যে, বাংলায় আমরা ২২টি আসন পাব। তখনও অনেকে তা মানেননি। কিন্তু আমরা ১৮টি আসন পেয়েছি। তিনটি আসন আমরা চার-পাঁচ হাজার ভোটের তফাতে হারিয়েছি। এবারে দেখবেন আমরা দুই তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসব। বাংলার মানুষ সেখানকার সরকারকে সরিয়ে বিজেপিকে নিয়ে আসার জন্য তৈরি হয়ে গিয়েছে।”
এদিন শাহ ফের বলেছেন, “সৌরভের সঙ্গে কোনওরকম রাজনৈতিক আলোচনাই হয়নি।” শুধু বাংলায় নয়, সারা দেশেই যে তাঁরা এনআরসি কার্যকর করবেন, সে কথা জানিয়ে এদিন তার সময়সীমার কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। শাহ বলেছেন, “২০২৪ সালের আগেই সারা দেশে এনআরসি কার্যকর হবে। অনুপ্রবেশকারীদের বাইরে পাঠানোর আইনি যে পদ্ধতি রয়েছে, তা মানা হবে। রাষ্ট্রসংঘের একটা কনভেনশন তৈরি করা হবে, তাতে আইনও থাকবে এবং তা মানা হবে।” অসমে এনআরসি নিয়ে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। আগামিদিনে দেশের বাকি জায়গায় এমনটা যাতে না হয় তার জন্য সরকার খতিয়ে দেখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তবে, অসমের সমস্যা নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি। শাহ বলেছেন, “আমরা পদ্ধতি খতিয়ে দেখব এবং নতুন একটা পদ্ধতি তৈরি করা হবে, যাতে বর্তমানে যে সমস্ত খামতি রয়েছে তা মিটিয়ে ফেলা যায়। অসমে সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে।” দেশের বিভিন্ন রাজ্যে যে ‘ডিটেনশন ক্যাম্প’ করা হচ্ছে তা কি সারা দেশে এনআরসি কার্যকর করার লক্ষ্যেই? এই প্রশ্নের উত্তরে শাহ বলেন, “সরকার আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ডিটেনশনের যে প্রক্রিয়া তা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল দেখবে। সরকারকে নিজেদের প্রস্তুতি নিতে হবে। একটা আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে যা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল দেখছে। প্রক্রিয়া সবেমাত্র শুরু হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.