Advertisement
Advertisement

Breaking News

নাগরিকপঞ্জিতে নেই কালিকাপ্রসাদের ভাইঝির নাম, অসমে ভ্রান্তির বহর

হতবাক শিলচরের ভট্টাচার্য বাড়ির সদস্যরা।

NRC Assam: Late Singer Kalika Prasad Bhattacharjya's niece name missing
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:August 4, 2018 12:57 pm
  • Updated:August 6, 2018 1:59 pm  

মণিশংকর চৌধুরি, শিলচর: সহজ পরবে লোকসুর আর মানুষের মহামিলন চেয়েছিলেন। সেই পরবের টান এখনও ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কলকাতাকে। সদন চত্বরে ক্ষণে ক্ষণে জেগে উঠছে কালিকাপ্রসাদের স্মৃতি। আর এই শহর থেকে বহুদূর শিলচরে বসে কাকাকে দারুণ মিস করছেন বছর চব্বিশের সুনয়না ভট্টাচার্য। নাগরিকপঞ্জিতে নাম আসেনি তাঁর। বারবার শুধু মনে হচ্ছে, যে কাকাকে একডাকে সারা বাংলার লোক চেনে, তাঁর ভাইঝি হয়েও এমন বিপাকে কেন পড়তে হল তাঁকে!

[গলদের চূড়ান্ত, ২০০ চিহ্নিত বিদেশির নামও ঢুকল নাগরিকপঞ্জিতে]

Advertisement

কলকাতায় কালিকাপ্রসাদ কোথায় থাকতেন? অনেকে না জানতে পারেন। কিন্তু শিলচরের ব্যাপার অন্যরকম। গোটা শিলচর তার এই কৃতি সন্তানের নাম ভোলেনি। হোটেল থেকে বেরিয়ে পথচলতি একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কালিকাপ্রসাদের বাড়িটা কোথায় জানেন? শুধু নামটুকু শুনেই বিহ্বল হলেন ভদ্রলোক। রাস্তা দেখিয়ে দেওয়ার দায় সারা নয়, নিজের কাজ ফেলে কালিকাপ্রসাদের বাড়িতে পৌঁছেও দিয়ে এলেন। বোঝাই যাচ্ছে, গোটা শিলচর কালিকাপ্রসাদকে কতটা মনের মণিকোঠায় তুলে রেখেছে। আর সেটা হওয়াই স্বাভাবিক! শহর তথা বাংলার বৃহত্তর বৃত্তে লোকসুরের সম্পদকে ছড়িয়ে দেওয়ার যে ব্রত ছিল কালিকাপ্রসাদের, তার বীজটি বোনা হয়েছিল এখানেই। কারণ শিলচরের ভট্টাচার্য বাড়ি মানেই লোকগানের আস্ত বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু রক্তসম্পর্কে নয়, এ বাড়িরই সুরের উত্তরাধিকার তিনি বহন করে চলেছিলেন আজীবন। যে কাকার কথা কালিকাপ্রসাদ প্রায়শই বলতেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, তিনি আজও সমস্ত সুর আর স্মৃতি আগলে বসে আছেন। কলকাতা থেকে এসেছি শুনে এক মুহূর্ত থমকালেন। বৃদ্ধের দু’ চোখে খেলা করে গেল হাজারও অনুভূতির রং। তারপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাতে থাকলেন কালিকাপ্রসাদের ঘরখানা। এক একটা ট্রফি দেখিয়ে বলে দিচ্ছেন, কোন অনুষ্ঠানে কালিকাপ্রসাদ এই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। তাঁকেও লোকগানের চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া বললে অত্যুক্তি করা হয় না। বস্তুত, গোটা ভট্টাচার্য বাড়িটাই শিলচরের কাছে বিশিষ্ট। সেই বাড়ির এক সদস্যের নাম না আসা তাই রীতিমতো চমকে দিয়েছে শিলচরকেও।

[কালাপানির ইতিহাস অতীত, নাগরিকপঞ্জিতে নাম নেই বাহাদুর গাঁওবুড়ার পরিবারের]

কালিকাপ্রসাদের জেঠতুতো ভাইঝি সুনয়না। স্নাতকোত্তর পাঠ সম্পূর্ণ। স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট আছে। এতদিন কোথাও কোনও সমস্যা নেই। আচমকা কেন নাগরিকপঞ্জিতে নাম এল না তা বুঝেই উঠতে পারছেন না কেউ। কাকা জগবন্ধু ভট্টাচার্য দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ। বললেন, “বোড়োদের মানে উপজাতি ভূমিপুত্রদেরও নাম আসেনি। কী বলি বলতো! ” নিয়ম বলছে, সংশোধন ছাড়া এই মুহূর্তে আর কোনও গতি নেই। আগামী এক মাসে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ সেই কাজে ঝাঁপাবেন। একইভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণে নামতে হবে সুনয়নাকেও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলছেন, কোনও সাধারণ মানুষের হেনস্তা হবে না। কিন্তু অসমে ভ্রান্তির বহর যে হারে প্রকাশ্যে আসছে, তাতে মনে হচ্ছে হেনস্তার সংজ্ঞাটাই এবার বদলে যাবে না তো!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement