সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটের আগে উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যে শক্তির পরীক্ষা দিতে নেমেছিল বিজেপি। মেঘালয়ে এনপিপির (NPP) সঙ্গে জোট ভেঙে একক লড়াইতে ঝাঁপিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সেখানে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল তারা। অন্যদিকে প্রথমবার পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়াই করেই নজর কাড়ল তৃণমূল। পাহাড়ি রাজ্যে শুধু খাতা খোলাই নয়, চমকপ্রদ ভাবে প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট ঝুলিতে টেনেছে তারা। আসনের বিচারে সংখ্যাটা ৫। সমস্ত আশঙ্কা উড়িয়ে মেঘালয়ে একক বৃহত্তম দল হল ন্য়াশনাল পিপল’স পার্টি। তাদের দখলে ২৫ আসন। তবে কোনও দলই সে রাজ্যে এককভাবে সরকার গড়তে পারল না।
বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যে এনপিপি জয়ী হয়েছে ১৭ আসনে। এগিয়ে রয়েছে ৮ আসনে। শতাংশের হিসেবে এনপিপি পেয়েছে ৩১.৩৭ শতাংশ ভোট। প্রধান বিরোধী দল হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে হয়েছে ইউডিপি। ১০টি আসনে জয়ের পাশাপাশি ১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে তারা। দখলে ১৬.৩৩ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বিজেপি ও কংগ্রেসের হারে পিছনে ফেলেছে তৃণমূল। ৩ আসনে জয় ও ২টি আসনে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ঘাসফুল শিবিরের ঝুলিতে রয়েছে ১৩.৭২ শতাংশ ভোট। আরও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে কংগ্রেস জিতেছে মাত্র ৫ টি আসনে। তবে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ১২.২৩ শতাংশ। অন্যদিকে সর্বস্ব নিয়ে লড়াই করার পরও বিজেপি জিতেছে মোটে ২টি আসনে। এখনও এগিয়ে রয়েছে একটি মাত্র আসনে। প্রাপ্ত ভোটের হার মাত্র ৯.২৬ শতাংশ।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, কংগ্রেস-বিজেপিকে মাত দিয়েছে তৃণমূল। কার্যত প্রথমবার লড়াই করে মেঘালয়ে বেশ ভাল ফল করেছে তারা। মেঘালয়ের ফল নিয়ে খুশি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। যারা সেই রাজ্যে লড়াই করেছেন তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে সহাস্যে তাঁর রসিকতা,, “কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে গুলিয়ে ফেলেছেন পাহাড়ি রাজ্যের মানুষ। আমি তো আগে কংগ্রেসেই ছিলাম তাই ওঁরা অনেকে ভেবেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসে।” সে রাজ্যের নেতা-কমীদের শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পূর্ণশক্তি দিয়ে লড়াই করে তৃণমূল যতটা তাৎপর্যপূর্ণ ফল করেছে, ঠিক ততটাই পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা একাধিক সভা করেও বিজেপিকে জেতাতে পারেননি। বরং ৩টি নিয়ে খুশি থাকতে হচ্ছে তাদের।
তবে কোনও দলই একা সরকার গড়তে পারবে না মেঘালয়ে। ত্রিশঙ্কু হয়েছে সে রাজ্যের বিধানসভা। এই সংকট কাটাতে অমিত শাহকে ফোন করেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা। দ্রুত জট কাটিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য হস্তক্ষেপের আবেদন জানান। তাঁর ফোনেই তৎপর হয়ে ওঠে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এনপিপি-কে সমর্থন দেওয়ার কথা জানান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.