সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিয়ে না করেই মা হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের সন্তানরা নিজেদের জন্ম এবং পরিচয়জনিত শংসাপত্রে কেবল মায়ের নামই লিখতে পারবেন। একই অধিকার পাবেন ধর্ষণের শিকার হওয়া মহিলাদের সন্তানও। কেরল হাই কোর্ট (Kerala High Court) এই মর্মে রায় দিয়েছে।
একইসঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতি পি ভি কুহ্নিকৃষ্ণণ আরও জানিয়েছেন– অবিবাহিত ‘মা’ এবং ধর্ষিতাদের সন্তানসন্ততিদেরও এই দেশে সম্মান ও মর্যাদা পাওয়ার অধিকার আছে। গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার আছে। বিয়ে না করে মা হওয়া কোনও মহিলার সন্তানও এই দেশের নাগরিক। কাজেই সংবিধানে বর্ণিত তাঁর কোনও মৌলিক অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সংবিধানই তাঁর মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্বে থাকবে। প্রসঙ্গত, যে মামলার সূত্র ধরে কেরল হাই কোর্টের এই রায়, সেই পিটিশনকারী অবিবাহিত মায়ের সন্তান। তবে তাঁর তিনটি নথিতে, বাবার নাম তিন রকম রয়েছে।
আদালত রেজিস্ট্রার অফ বার্থস অ্যান্ড ডেথস-কে নির্দেশ দিয়েছে, আবেদনকারী ব্যক্তির বাবার নাম বার্থ রেজিস্টার থেকে মুছে ফেলা হোক। পাশাপাশি জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি যদি আবেদন করেন যে, তাঁর জন্মের নয়া শংসাপত্র ইস্যু করা হোক, যেখানে তাঁর মাকে ‘সিঙ্গল পেরেন্ট’ হিসাবে দেখাতে হবে, তা-ও যেন অবিলম্বে করা হয়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, যদি অবিবাহিত মায়েদের সন্তান এবং ধর্ষণের শিকার হওয়া মহিলাদের সন্তানদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা না হয়, তা হলে তাঁরা অকল্পনীয় মানসিক কষ্টের মুখে পড়বেন। এই প্রসঙ্গে মহাভারতের ‘কর্ণ’ চরিত্রের উদাহরণও দেন বিচারপতি কুহ্নিকৃষ্ণণ। বিচারপতি বলেন, ‘‘আমরা এমন একটি সমাজ চাই, যেখানে কর্ণের মতো কোনও চরিত্র থাকবে না। কারণ তিনি তাঁর অভিভাবকদের সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিলেন, তাই সারা জীবন অপমান সয়েছেন। এ জন্য তিনি নিজের জীবনকেই অভিশাপ দিতেন। আমরা চাই, প্রকৃত সাহসী সেই কর্ণকে, যিনি মহাভারতের আসল নায়ক ছিলেন। আমাদের সংবিধান এবং সাংবিধানিক আদালত সমস্ত কর্ণদের নিরাপত্তা দেবে, যাতে এ যুগের কর্ণরা, দেশের অন্যান্য নাগরিকদের মতোই সম্মান এবং মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারেন।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.