সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিবাদ, আন্দোলনের ছন্দ কেটে দিয়ে দিল্লির শাহিনবাগে CAA’র সমর্থনে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির একদল কাশ্মীরি পণ্ডিত। তিরিশ বছর আগে এই দিনেই ভূস্বর্গ থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ধাপে ধাপে বিতাড়িত করার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছিল। সেই স্মৃতিচারণা এবং কেন্দ্রের কাছে নিজেদের ঘরে ফিরে আসার আবেদন জানাতে আশায় রবিবার সন্ধেবেলা তাঁরা শাহিনবাগে হাজির হন। প্রথমে তাঁদের আগমন প্রতিবাদীরা ভালভাবে গ্রহণ করতে না পারলেও, পরে তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বক্তব্য পেশের জন্য মঞ্চ ছেড়ে দেন। সেখান থেকে পণ্ডিতরা ৩০ বছর আগে তাঁদের উচ্ছেদের তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) তৈরির আবেদন জানান।
‘I believe that you will fight for us’
– a Kashmiri Pandit in Shaheen Bagh todayThis is going to haunt the current regime for a long time.
Shaheen Bagh has become a symbol of resistance. #ShaheenBaghProtests #NRC_CAA_Protest pic.twitter.com/8DOFm1Zj2o
— We The People of India (@ThePeopleOfIN) January 19, 2020
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে শাহিনবাগের লাগাতার প্রতিবাদ চলছে। প্রতিবাদের জোর কতটা, তা দেখাতে ওই দিন আয়োজন করা হয়েছিল ‘জশন-এ-শাহিন’ নামে এক অনুষ্ঠানের। কবিতায়, গানে প্রতিবাদের অস্ত্রে আরও শান দেওয়ার মাঝেই কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ঢুকে পড়েন। নিজেদের দুর্দশার কথা ব্যক্ত করেন তাঁরা।
নয়ের দশকের গোড়ায় কাশ্মীর উপত্যকায় তাঁদের উপর নিপীড়ন এবং অত্যাচারের মাত্রা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে নিজেদের জায়গায় ছেড়ে জম্মু এবং আশেপাশের জায়গায় স্থানান্তরিত হতে তাঁরা বাধ্য হন। সেসময় ভূস্বর্গে পাক নেতৃত্বাধীন ইসলামিক সংস্কৃতির দাপটে গণহারে তাঁদের এই উচ্ছেদের পর ৩০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের হাত ধরে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের স্বস্থানে ফেরার আশা উজ্জ্বল হচ্ছে। তাই আইনকে সমর্থন জানিয়ে মোদি সরকারের কাছে তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন, উপত্যকার কোলে তাঁদের নিজেদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হোক। রবিবার শাহিনবাগ থেকে সেই আরজিই জানালেন তাঁরা। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের আরও আবেদন, নয়ের দশকের সেই গণউচ্ছেদের তদন্তে তৈরি করা হোক SIT. এদিন দিল্লির যন্তরমন্তরের সামনে মৌন প্রতিবাদও জানিয়েছেন শ খানেক কাশ্মীরি পণ্ডিত।
উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরে ফেরার দাবি বহুদিনের। সংশোধিত নাগরকিত্ব আইন কার্যকর করে তাঁদের সেই দাবি পূরণ করা হোক, কেন্দ্রের কাছে এই আরজিও রেখেছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, ”মোদি বলছেন, প্রতিবেশী দেশগুলিতে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের ভারতের সসম্মানে নাগরিকত্ব দেবেন। কিন্তু আমরা বলতে চাই যে সবার আগে আমাদের মতো কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসনে ব্যবস্থা আগে করুন, যাঁরা ৩০ বছর আগে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল।” এরপর ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনি তুলে নিজেদের বক্তব্য শেষ করেন তাঁরা। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের এই বক্তব্যের পর শাহিনবাগের প্রতিবাদীরা তাঁদের সমর্থনে ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এভাবেই CAA বিরোধী মঞ্চ ব্যবহার করে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা নিজেদের দাবিতে সুর চড়ালেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.