সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে নিরুদ্দেশ হন নিউ আলিপুরের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া এক যুবক। চার বছর পর মুম্বইয়ে (Mumbai) তাঁর সন্ধান পেল সিবিআই (CBI)। যুবক নিরুদ্দেশ হওয়ার পর তাঁর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে সন্ধান শুরু করেছিল পুলিশ এবং সিআইডি। এরপর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তের দায়িত্ব পায় সিবিআই। শেষ পর্যন্ত মুম্বইয়ে যুবকের খোঁজ মিলল। কলকাতায় এনে নির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁকে পরিবারের হাতে তুলে দেবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
ওই যুবকের নাম তৃষিত বিশ্বাস। চার বছর আগে নিরুদ্দেশ হওয়ার সময় সে ছিল কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বাবা তারকেশ্বর বিশ্বাসের বকা খেয়ে অভিমানে ঘরছাড়া হন তৃষিত। যদিও স্নেহের সন্তানকে ফিরে পেতে সব রকম চেষ্টা চালান পিতা। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে একাধিক সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন, দূরপাল্লার ট্রেনে, বাসে, দেওয়ালে পোস্টার ছড়িয়ে দেন। সেখানে ছিল তৃষিতের ছবি এবং তারকেশ্বরের যোগাযোগের নম্বর। যদিও কাজ হয়নি কিছুতেই। এরই মধ্যে স্থানীয় থানা থেকে মামলা যায় সিআইডির (CID) কাছে। যদিও যুবকের খোঁজ না পেয়ে ২০২১ সালে আদালতে মামলা বন্ধের রিপোর্ট জমা দেয় সিআইডি।
এর পরেও হার মানতে রাজি ছিলেন না পেশায় রেলকর্মী তারকেশ্বর। তিনি কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করেন। একইসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থগুলিরও কাছেও সাহায্য চান। অন্যদিকে সন্তান হারানো পিতা ছেলের পছন্দের খাবার খাওয়া ছেড়ে দেন। বাড়িতে সব রকম উৎসব পার্বণ বন্ধ হয়। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তৃষিতের মা। এরই মধ্যে গত বছর নভেম্বরে মাসে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মামলা যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। যেহেতু তৃষিতকে বাংলাদেশের নাটোরে দেখা গিয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছিলেন তারকেশ্বর।
পিতার সন্দেহ ছিল ছেলেকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে সেখানে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করা হয়। যদিও খোঁজ মেলেনি তৃষিতের। সম্প্রতি মুম্বইয়ের থানে এলাকার পালঘরে দক্ষ সিঙ্ঘানিয়া নামে এক যুবকের খোঁজ পান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, দক্ষ সিঙ্ঘানিয়ার আধার কার্ড-সহ একাধিক নথি থাকলেও এই দক্ষই আসলে নিখোঁজ তৃষিত বিশ্বাস। এই নামেই মুম্বইয়ে বসবাস করছিল সে। নিরাপত্তরক্ষীর কাজ নিয়েছিল। তাঁকে কলকাতায় ফেরানোর বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে সিবিআই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.