শুভঙ্কর বসুর: যার বা যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে তাদের যদি নোটিসই না পাঠানো যায় তাহলে মামলার অর্থ বৃথা। অর্থাৎ মামলাটি দায়ের হওয়ার পরও শুনানিতে গিয়ে আটকে যায়। লকডাউন বিধি কার্যকর হওয়ার পর থেকে কলকাতা হাই কোর্ট-সহ দেশের একাধিক উচ্চ আদালতে ভারচুয়াল শুনানির সময় দেখা গিয়েছে অপর পক্ষকে নোটিসই পাঠানো যায়নি। ফলে জরুরি ভিত্তিতে বিষয়গুলির নিষ্পত্তির প্রয়োজন থাকলেও বিধি সম্পন্ন করতে না পারায় একাধিক জরুরি মামলা এখনও ঝুলে রয়েছে। অনলাইনে শুনানির সুযোগ থাকলেও তা সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সাধারণত সশরীরে কিংবা পোস্টের মাধ্যমে অপর পক্ষকে নোটিস পাঠানোই আইন স্বীকৃত বিধি। কিন্তু লকডাউন ও সংক্রমনের ভয়ে এই বিধি সম্পন্ন করতে পারছিলেন না অনেকেই।
এবার মামলাকারীদের সুবিধার্থে এই বিধিতে ছাড় দিল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) জানিয়ে দিয়েছে, এবার থেকে টেলি মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp), ই-মেল ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে অপরপক্ষকে মামলার নোটিস পাঠানো যাবে। এতদিন কোনও ইলেকট্রনিক মাধ্যম বা ফ্যাক্সের মাধ্যমে মামলার নোটিস আইন স্বীকৃত ছিল না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার ফলে এখন আর মামলার নোটিস পাঠাতে অসুবিধায় পড়তে হবে না মামলাকারীদের। বাড়িতে বসেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে এ রাজ্যের আইনজীবী মহল। সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী অরিন্দম দাস বলেন, “সর্বপ্রথম বম্বে হাই কোর্ট ইলেকট্রনিক মাধ্যমে নোটিস পাঠানোর স্বীকৃতি দেয়। এখন সুপ্রিম কোর্টে ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি অবশ্যই ওয়েলকমিং, কারণ নোটিস সার্ভের বিধি যখন তৈরি হয়েছিল তখন ইলেকট্রনিক মাধ্যম এতটা উন্নত ছিল না। এখন সময় বদলেছে। ফলে অবশ্যই এই সিদ্ধান্তে মানুষের সুবিধা হবে।”
হাই কোর্টের আরেক আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরির মতে, “এই সিদ্ধান্তের ফলে সাশ্রয় ও দ্রুত নোটিস পাঠানো দুইই সম্ভব হবে। তবে এক্ষেত্রে রেসপনডেন্টের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বা ই-মেল আইডি জানা না থাকলে অসুবিধা। সেক্ষেত্রে প্রথাগত পদ্ধতিই ভরসা।” কী জানিয়েছে শীর্ষ আদালত? একটি ব্যাংক বিষয়ক মামলার সূত্রে প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদে জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে পোস্ট অফিসে গিয়ে নোটিস সার্ভের ক্ষেত্রে সমস্যার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সে কারণেই এবার হোয়াটসঅ্যাপের মত টেলি মেসেঞ্জার। এছাড়াও ই-মেল এবং ফ্যাক্সের মাধ্যমে নোটিস সার্ভে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.